খেলায় হেরে পেশিশক্তি প্রয়োগের দায় কার?

 

খেলায় হার-জিত থাকবেই। জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছুতে দরকার অনুশীলন। কতোটা? তা উপলব্ধির জন্যই তো প্রতিযোগিতা। পরাজয়ে হিংসাত্মক আচরণ শুধু লক্ষ্যভ্রষ্টই করে না, শিক্ষাহীনতায় হীনমানসিকতারই বহির্প্রকাশ ঘটে। চরম এ সত্যটা শিক্ষার্থী প্রতিযোগীদের শেখাতে না পারার ব্যর্থতা কার? পরিবেশের নাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের? আন্তঃবিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতার পর চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়ামের বাইরে দু দল প্রতিযোগী শিক্ষার্থী খেলোয়াড় ও তাদের সাথে থাকা ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের পর এ প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই সামনে আসে।

চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় বনাম সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল প্রতিযোগিতা উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যে খেলা যতো প্রতিযোগিতাপূর্ণ সে খেলা ততো উত্তেজনা ছড়ায়। উত্তেজনার উষ্ণতা নিতে হয়, সংঘর্ষে জড়ানো মানে উত্তেজনার আগুনে পোড়া। একদল পরাজয় স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে না পেরে অপর পক্ষের ওপর হামলা এবং পাল্টা হামলার ঘটনাটি ঘটে গতপরশু। সংঘর্ষের জের ধরে সরোজগঞ্জে সড়ক অবরোধ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় একটি বাস। বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কে পরিবহন ধর্মঘটেরও ডাক দেয়া হয়েছে। আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার পর দু পক্ষের বিরোধের জের শেষ পর্যন্ত আর কতোদূর গড়ায় তা নিয়েও দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা নয়! খেলায় হেরে পেশিশক্তি প্রয়োগ সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে কারণে সমাজও দায় এড়াতে পারে না। সমাজের সচেতনমহলের সামাজিক দায় পদে পদে। তবে আন্তঃশিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার দায় যতোটা না সমাজের তার চেয়ে ঢের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। শিক্ষকসমাজ নিশ্চয় তা অস্বীকার করবে না।

খেলে জয় অর্জনের বদলে পেশিশক্তি প্রয়োগের পূর্বে কেন দায়িত্বশীলদের যথাযথ পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হলো না? খেলার মাঠ ছাড়ার পর হামলা হতে পারে- এরকম আশঙ্কা না থাকলেও তো উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ এড়ানোর মতো পূর্ব প্রস্তুতি থাকা দরকার ছিলো। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, খেলার মাঠগুলো খেলাশূন্য হওয়ার আড়ালে প্রতিযোগিতায় হেরে হিংসাত্মক হয়ে ওঠা অন্যতম কারণ। আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের হিংসাত্মক মানসিকতা পরিহারে প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান জরুরি।