নিজের পরিচয় গোপন করে অন্যের পরিচয় দিয়েছে একজন : ইমরান দীর্ঘদিনের দাগী
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার একটি ছাত্রাবাস থেকে ছাত্র অপহরণের সময় হাতেনাতে ধরা পড়া তিন যুবকের কেউই ঠিক মতো তাদের ঠিকানা দেয়নি। একজন নিজের ঠিকানা বেমালুম গোপন করে হুবহু অন্যের ঠিকানা দিয়েছে। গতকাল তাদের পরিচয় পত্রিকায় প্রকাশের পর এরকমই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা কালিদাসপুরের লাল্টু এক প্রতিবাদলিপিতে বলেছেন, আমার ছেলের নাম সম্রাট। সে ধরা পড়েনি। বাড়িতেই রয়েছে। তাছাড়া আলমডাঙ্গা মিয়াপাড়ার লাল্টু বা তার ছেলে সম্রাট বলেও কেউ নেই। এ কারণেই আমি নিশ্চিত, চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার ছাত্রাবাস থেকে এক ছাত্রকে অপহরণ করে পলাশপাড়ায় নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়া তিন যুবকের এক যুবক নিজের প্রকৃত পরিচয় আড়াল করেছে। আমার ছেলে সম্রাটকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি ধৃত অনেকেই। সে প্রতিপক্ষ হিসেবে আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হীন উদ্দেশে আমার ছেলের পরিচয় ব্যবহার করেছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, ইমরানের বাড়ি হারদী গ্রামে নয়, আলমডাঙ্গা শহরের মসজিদপাড়ায়।
এদিকে আলমডাঙ্গার একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, চুয়াডাঙ্গায় ছাত্র অপহরণে ব্যর্থ হয়ে মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে ধরা পড়াদের মধ্যে ইমরান দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রকারের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। সে আলমডাঙ্গা শহরের মসজিদপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল আব্দুর রহমানের ছেলে। তার বাড়ি থেকে ২০১১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাব অভিযান চালিয়ে ৭০ রাউন্ড গুলি উদ্বার করে। এর কিছু দিন আগে আলমডাঙ্গা পশুহাটের নিকট থেকে ছিনতাইকালে ৩ ছিনতাইকারী ধরা পড়ে। তিনজন ধরা পড়ার পর তাদের নেতা হিসেবে ইমরানের নাম পুলিশকে জানায়। সে মামলারও আসামি ইমরান। এছাড়া আলমডাঙ্গা রথতলা থেকে স্কুলপড়ুয়া এক ছাত্রীকে তাড়িয়ে ধরার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে কয়েক বছর আগে ৯ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এলাকায় অভিযোগ রয়েছে- ইমরান কুষ্টিয়াভিত্তিক উঠতি বয়সী ডাকাতদলের সর্দ্দার। কয়েক বছর আগে তার নেতৃত্বে ডাকাতির সময় কুষ্টিয়ার নলখোলা এলাকায় ৪ জন উঠতি বয়সী ডাকাতকে গ্রামবাসী ধরে হত্যা করে। আলমডাঙ্গা রথতলার রবি ঘোষের ছেলে রতনও ওই ঘটনায় মারা পড়ে। ডাকাতদলের নেতৃত্বদানকারী ইমরান পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের গুলশানপাড়ার একটি বাড়িতে কয়েকজন ছাত্র বসবাস করে। এদের মধ্যে রাশেদ নামের একজনকে খুঁজতে গিয়ে না পেয়ে সামাদ নামের এক ছাত্রকে বড় ভাই ডাকছে বলে মোটরসাইকেলে তুলে নেয় তিন যুবক। পলাশপাড়ার একটি বাড়ির দোতলায় তোলার সময় সামাদ ছিটকে পালানোর চেস্টা করে। স্থানীয়রা দেখে তিন যুবককে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দেয়। এরা যে পরিচয় দেয় তা গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে আলমডাঙ্গায় পরিচয় বিভ্রাটের বিষয়টি প্রকাশ পায়। পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা বলেছে, ধরা পড়লে অনেকেরই ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কেউ পরিচয় গোপন করলেও ছবি দেখে বিভ্রান্ত কেটে যায়। উঠতি বয়সী তিন যুবকের ছবি না থাকায় এবং ভুল ঠিকানা দেয়ায় বিভ্রাট ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদক বলেছেন, গতপরশু চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি ছবি নিতে দেননি। সে কারণেই তাদের ছবি পত্রিকায় প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।