স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জেরপ্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাত খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ভারতে গ্রেফতারকৃত নুরহোসেনের বিনিময়ে উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলেদিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে দুদেশের সরকার বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে বলে কোলকাতার একটি সংবাদপত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতেরপররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় ও বৈদেশিক সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় এবং দেশটিরউত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জেনারেল (অব.) ভি. কে. সিংদুদিনের বাংলাদেশ সফরে বিষয়টি সুরাহা করতে ঢাকায় এসেছেন উল্লেখ করে গতকার শনিবারকোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।পত্রিকাটিপ্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ভারতীয় হাইকমিশনের এক অফিসার শুক্রবার গাজিপুরেরকাশিমপুর কারাগারে অনুপ চেটিয়ার সাথে দেখা করেছেন। চেটিয়া তাদেরজানিয়েছেন, তিনি ভারতে ফিরতে রাজী। এরপরেই চেটিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করেভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পত্রিকাটিরপ্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারত সরকার উলফার সাথে শান্তি আলোচনা শুরুকরলে চেটিয়াও তা সমর্থন করে দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জিজানিয়েছে। কিন্তু আইনগত কিছু জটিলতায় বাংলাদেশ চেটিয়াকে হস্তান্তর করতেপারেনি। এরপর বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ বেশ কিছু চুক্তিতেস্বাক্ষর করার পরে চেটিয়ার দেশে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাড়িয়েছে।শুক্রবার ভারতীয় হাইকমিশনের কনসুলার জে পি সিংহ এক দোভাষীকে নিয়ে গাজিয়াবাদকারাগারে চেটিয়ার সাথে কথা বলেন। জেলারও সে সময়ে হাজির ছিলেন। চেটিয়াদেশে ফিরতে চান কি না, তার কাছে জানতে চান সিংহ। জবাবে চেটিয়া বলেন, ‘দেশেফিরতে চেয়ে তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জিজানিয়েছেন। তার আপত্তির কোনও কারণ নেই।’
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জেরপ্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাত খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামিনুর হোসেন। কয়েক মাস আগে দমদম বিমানবন্দরের কাছে একটি বাসা থেকে ধরা পড়েনতিনি। সাধারণ পরিবহনকর্মী থেকে শাসক দল আওয়ামী লিগের প্রভাবশালী নেতা হয়েওঠা নুর হোসেনকে বাংলাদেশ সরকার আদৌ ফেরায় কি না, তা নিয়ে জল্পনা সৃষ্টিহয়েছিলো।
অপরদিকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাড়ি থেকে ১৯৯৭ সালেআসামের জঙ্গি সংগঠন উলফার প্রধান নেতা অনুপ চেটিয়াকে গ্রেফতার করেছিলোবাংলাদেশের পুলিশ। বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ, জাল পাসপোর্ট ও অস্ত্র রাখারতিনটি মামলায় তার সাত বছর কারাদ- হয়। ২০০৭-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি চেটিয়ার সাজারমেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তাকে নিরাপদ হেফাজতে জেলে রেখে দিয়েছে বাংলাদেশসরকার। ২০০৯-এ উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়াসহ উলফার বেশ কিছু প্রথমসারির নেতাকে গোপনে ভারতের হাতে তুলে দেয় শেখ হাসিনার সরকার।