কোটচাঁদপুর বলুহর সরকারি মৎস্য বাঁওড়ে পাটাবাঁধ না দেয়ায় বেরিয়ে গেছে কয়েক লাখ টাকার মাছ

 

শাহনেওয়াজ খান সুমন: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর বলুহর সরকারি মৎস্য বাঁওড়ে পাটাবাঁধ না দেয়ায় বেরিয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ। পাটাবাঁধ নির্মাণের নামে কাগজ-কলমে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ দেখানো হলেও নির্মাণ হয়নি বাঁধ। অর্জিত হয়নি গত অর্থ বছরের বাঁওড়ের লক্ষ্যমাত্রা। ম্যানেজারের দুর্নীতি অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় সরকারি বাঁওড়টি ধ্বংস হতে চলেছে বলে অভিযোগ মৎস্যজীবী ও এলাকাবাসীর। বাঁওড় ম্যানেজার মজনুর রহমানকে গত এক মাস আগে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও মৎসজীবীরা জানান, গত দেড় বছর আগে সরকারি বলুহর বাঁওড়ে ম্যানেজার হিসেবে মজনুর রহমান যোগদান করেন। তার যোগদানের পর বাঁওড়ে পোনা ছাড়া, মাছ বিক্রি মাছের খাবার ক্রয়ে ব্যাপকভাবে অনিয়ম করা হয়েছে। এসব খাত থেকে মোটা অঙ্কের সরকারি অর্থ লুটপাট করা হয়েছে বলে তারা জানায়। বারো মাসে ব্রিজের নিচে বাঁওড়ের মুখে টেন্ডার ছাড়াই পাটাবাঁধ নির্মাণ করার কাজ শুরু করেন ম্যানেজার। এলাকার লোকজন টেন্ডারের মাধ্যমে পাটাবাঁধ নির্মাণের দাবি জানায়। এলাকাবাসীর দাবি উপেক্ষা করে পুরাতন বাঁধের বাঁশ দিয়ে যেনতেনভাবে বাঁধ নির্মাণ করেন বাঁওড় ম্যানেজার। দুদিন যেতে না যেতেই বাঁধটি ভেঙে যায়। ফলে ভাঙা বাঁধ দিয়ে বাঁওড়ের কয়েক লাখ টাকার মাছ কপোতাক্ষ নদসহ বিভিন্ন খাল-বিলে বের হয়ে যায়। ওই বাঁধের জন্য বরাদ্দকৃত ৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ম্যানেজার নিজে উত্তোলন করে নিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বলুহর গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও রফিউদ্দিন জানান, ম্যনেজার মজনুর রহমান যোগদানের পর থেকে বাঁওড়ে ঠিকমতো পোনা ছাড়া হয়নি। মাছ বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। বাঁওড়ের মাছের জন্য বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে বাঁওড় এলাকার মৎস্যজীবীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কোটচাঁদপুর এলাকার রিপন হোসেন বলেন, ম্যানেজার মজনুর রহমান বাঁওড় মাছ চাষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে। সম্প্রতি বারো মাসে ব্রিজের নিচে টেন্ডার ছাড়াই নিজে পুরাতন বাঁধের বাঁশ দিয়ে পাটাবাঁধ নির্মাণ করে ৩লাখ ৪৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে নিয়ে গেছেন। দুদিন যেতে না যেতেই বাঁধটি ভেঙে যায়। ফলে বাঁওড়ের বেশ কয়েক লাখ টাকার মাছ ওই বাঁধ দিয়ে বেরিয়ে গেছে।

বলুহর বাঁওড়ের সহকারী ম্যানেজার ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার আব্দুল মাবুদ জানান, আমি গত ১৬ এপ্রিল এই বাঁওড়ে যোগদান করেছি। গত অর্থ বছরে বাঁওড়ের মাছ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। মাছের সরকারি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিলো ২০০ মেট্রিক টন। সেখানে অর্জিত হয়েছে মাত্র ১৩০ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার কারণ সস্পর্কে তিনি আরও বলেন, গত বর্ষা মরসুমে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় বাঁওড়ের মাছ বাড়েনি। বাঁধ নির্মাণ করেছেন আমার আগের ম্যানেজার। তিনি কীভাবে কতো টাকা ব্যয় করে বাঁধ নির্মাণ করেছেন তা আমার জানা নেই।