শ্রীশ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ পরমহংসদেবের ১৩৫তম বার্ষিক সার্বভৌম জন্মোৎসব

 

মহাসিন আলী: ‘নর-ই সাক্ষাৎ নারায়ণ। সুতরাং নরের সেবা ব্যতিত নারায়ণের কৃপা হয় না। তাই গার্হস্থ্য ধর্মের এতো মাহাত্ম্য। আপন প্রাণকে বিশ্ব প্রাণের সহিত মিলাইতে হইবে।’আদর্শ গার্হস্থ্য জীবন প্রতিষ্ঠাই যার মুখ্য উদ্দেশ্য, তিনি আর কেউ নন; তিনি সদগুরু নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেব। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের নাতি। যোগীগুরু, জ্ঞানীগুরু, তান্ত্রিকগুরু, প্রেমিকগুরু, ব্রহ্মচর্য সাধন, বেদান্তবিবেক, তত্ত্বমালা আদি গ্রন্থ রচয়িতা মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর শ্রীশ্রী গুরুধামের পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীশ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেব।

১০ আগস্ট রোববার পূণ্য ঝুলন পূর্ণিমা তিথিতে মেহেরপুর সদর উপজেলার ভৈরব নদ তটস্থ শ্রীশ্রী ঠাকুরের পূণ্য জন্মভূমি নিগমানুরাগীদের পরম পূণ্যতীর্থ কুতুবপুর শ্রীশ্রী গুরুধামে পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীশ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেবের ১৩৫তম বার্ষিক সার্বভৌম জন্মোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে আজ শনিবার সন্ধ্যায় অধিবাস ও আগামীকাল রোববার শ্রীশ্রী গুরুব্রহ্মের আসনে বিশেষ পূজা, হোম, স্বাধ্যায়, অঞ্জলি প্রদান, দীক্ষাদান, মধ্যাহ্ন ভোগরাগ, দরিদ্র নর-নারায়ণের সেবা, শ্রীশ্রী ঠাকুর মহারাজের জীবনী বাণী, আদর্শ-উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও ভাবধারার ওপর আলোচনা এবং বিকেলে ধর্মসভা ইত্যাদি সদকর্ম অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর এসময় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত আসেন মেহেরপুরের কুতুবপুর শ্রীশ্রী গুরুধামে। সম্প্রতি কুতুবপুর শ্রীশ্রী গুরুধামে পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীশ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতীদেবের ভক্তদের জন্য নতুন করে আরো একটি বিশাল ৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

মহাপুরুষের জন্মস্থান দর্শনের জন্য বছরের প্রায় সব সময় বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রী শ্রী ঠাকুর মহারাজের ভক্ত-শিষ্যগণ এসে থাকেন। মহাপুরুষের দাতব্য চিকিৎসালয়টি বর্তমানে বন্ধ থাকলেও তারাই জায়গায় প্রতিষ্ঠিত সরকারি কমিউনিটি সেন্টারটি স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। পরমহংস দেব প্রতিষ্ঠিত কাথুলী নিগমানন্দ সারস্বত মন্দির নামক উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বর্তমানে বিলুপ্ত হলেও বিদ্যালয়টির ৩৬ দশমিক ১৮ একর সম্পত্তি বর্তমানে আছে।

মোট ৭২শতাংশ জমির ওপর গুরুধাম মন্দিরটি অবস্থিত। গুরুধামের প্রধান দায়িত্বে আছেন সেবায়েৎ শ্রীমৎ স্বামী অখণ্ডানন্দ সরস্বতী মহারাজ। এটিসহ মেহেরপুর শহর, মাগুরা, বরিশাল, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর ও চট্টগ্রামের আশ্রমসমূহ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন সারা বাংলাদেশের ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা বোর্ড। এছাড়াও ভারত বর্ষে রয়েছে অর্ধশতাধিক আশ্রম। বাংলাদেশ ও ভারতের আশ্রম, সংঘাশ্রম ও সংঘসমূহ নিয়ন্ত্রণ করেন আসাম-বঙ্গীয় সারস্বত মঠের মোহান্ত শ্রীমৎ স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ সরস্বতী। ভারতের আসাম প্রদেশের যোরহাট জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে কোকিলা মুখ নামক স্থানে এই মাঠটি শ্রীশ্রী ১০৮ স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী পরমহংসদেব নিজের হাতেই প্রতিষ্ঠা করেন।