প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ২২ রমজান। পবিত্র মাহে রমজানের নাজাতের দশকের আজ দ্বিতীয় দিন। হাদিসের বর্ণনা মতে শেষ দশকেই রয়েছে সেই মহিমান্বিত রজনি শবেকদর যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। শবেকদরেই পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন নাজিল হয়। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয় আমি কদরের রাত্রিতে এ কোরআন নাজিল করেছি। আপনি জানেন কি কদরের রাত্রি কি?কদরের রাত্রি হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম (সুরা কদর)। সুতরাংকদরের রাতে কেই যদি ইবাদত করে তাহলে সে এক হাজার মাস অর্থাৎ তিরাশি বছর চার মাসেরও বেশি ইবাদত করার ছওয়াব প্রাপ্ত হবে। কোরআনে এক হাজার বছরের সমান বলা হয়নি,বরং বলা হয়েছে এক হাজার মাস অপেক্ষাও বেশি। আর বেশির পরিমাণও আমরা জানিনা,উহা হাজার মাসের চেয়ে কতো বেশি উত্তম।এ শবেকদরের তালাশেই হুজুরে আকরাম (সা.) রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে নিয়মিত এতেকাফ করতেন। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি ঈমানের সাথেও ছওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রি ইবাদতে কাটাবে তার পূর্বের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে (বুখারি,মুসলিম)। অপর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, শবেকদরের রাত্রে হযরত জীব্রাঈল (আ.) ফেরেশতাদের একটি জামাতের সাথে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং এমন প্রত্যেক বান্দার জন্য রহমতের দোয়া করেন যে দাঁড়িয়ে অথবা বসে আল্লাহর জিকির করে বা ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত থাকে(মেশকাত,বায়হাকী শো’আবুল ঈমান)। তবে কদরের রাত ঠিক কোন দিন তা হাদিসে অথবা কোরআনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। কিন্তু অধিকাংশ হাদিসের রেওয়ায়েত অনুসারে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে উহা শেষ দশকেই রয়েছে। এক হাদিসে হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা শবে কদর তালাশ করিবে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিতে (বুখারি)। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে আর এক রেওয়াতে বর্ণিত আছে,নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা শবে কদরকে তালাশ করবে রমজানের শেষ দশকে,মাসের নয় দিন বাকি থাকতে,সাত দিন বাকি থাকতে,পাঁচ দিন বাকি থাকতে (বুখারি)। অপর হাদিসে আবু বাকরা (রা.) বলেন, আমি রাসুলে কারিম (সা.) কে বলতে শুনেছি,তোমরা শবেকদরকে তালাশ করবে রমজানের নয় দিন বাকি থাকতে,সাত দিন বাকি থাকতে,পাঁচ দিন বাকি থাকতে,তিন দিন বাকি থাকতে অথবা শেষ রাত্রিতে- অর্থাৎ ২১,২৩,২৭ ও ২৯ রমজানের রাত্রিতে (তিরমিজি)। এজন্য আমাদের উচিত রমজানের বাকি দিন রাতগুলো ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো।