দামুড়হুদায় গৃহিনীদের রাজহাঁস পালনে ব্যাপক সাড়া

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার খাল-বিল, হাওড়-বাওড় নদী-নালা ও মুক্ত জলাশয়ের তীরবর্তী গ্রামের গৃহিনীরা রাজহাঁস পালন করে বাড়তি আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন। রাজহাঁস পালন করে অনেকে নিজ ইচ্ছামতো সংসারে হাত খরচ করতে পেরে তারা খুশি। গৃহিনীরা বাড়িতে বসে এ আয়কে বাড়তি রোজগারের নতুন পথ বা আর্শীবাদ হিসেবে মনে করেন। অনেক অসচ্ছল পরিবার রাজহাঁস পালন করে সংসারে সচ্ছলতা দেখা পেয়েছে।

ফাতেমা, রাবেয়া, মনিরা, হামিদা, লতিফা নামের নদীর তীরবর্তী গ্রামের একাধিক গৃহিনীরা বলেন, রাজহাঁস পালন করতে তেমন একটা পুঁজির দরকার হয় না। যেনতেনভাবে বাড়ির মধ্যে ভৌত অবকাঠামো তৈরি করে রাতে তাদেরকে নিরাপদে রাখতে হয়। অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের সংসারে বাড়তি আয় হিসেবে রাজহাঁস পালন করা যায়। ধানের গুঁড়ো, ভাত ও সবুজ ঘাস তাদের প্রিয় খাদ্য। পানিতে থাকা অবস্থায় তারা পানিতেই নিজের খাদ্য নিজেই সংগ্রহ করে খায়। তবে এরা দলবদ্ধভাবে পানিতে ও ডাঙায় চলাচল করতে ভালোবাসে। প্রতিদিন সকালে হাঁস পানিতে দেয়ার আগে ধানের গুঁড়ো, ফ্যান ও ভাত এক সাথে মেখে দিলে তারা পেট পুরে খেয়ে বাড়ি থেকে পানিতে যায়। পাড়ার সবার হাঁস একসাথে হয়ে তার দলবদ্ধভাবে পানিতে সারা দিন দাফিয়ে বেড়ায়। সন্ধ্যার আগে তারা দলবদ্ধভাবে নিজ নিজ বাড়ি ফেরে। হাঁস ঘরে তোলার আগে তাদের সকালের মতো করে খেতে দিলেই চলে। রোগ বালাই কম হওয়ার কারণে দ্রুত তারা বেড়ে ওঠে। রাজহাঁস বছরে১৫/২০টি ডিম দেয়। এক জোড়া ডিম ৬০/৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়। গৃহিনীরা ডিম বিক্রি লাভজনক মনে করেন না। তাই ডিমের তা দিয়ে বাচ্চা তুলে বিক্রি করতে পছন্দ করেন। বর্তমানে কেজি দরে রাজহাঁস বিক্রি করার রেওয়াজ শুরু হয়েছে। একটি বয়স্ক হাঁস ৪/৫ কেজি ওজন হয়ে থাকে। বর্তমানে ১শ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সব সময় রাজহাঁস বিক্রি হয় না। ডিম পাড়ার আগে কোনো গৃহিনী হাঁস বিক্রি করেন না। রাজহাঁস পালন করে সংসারে বাড়তি খরচ জোগাতে পেরে অনেকের মতো তারাও খুশি।

সুফিয়া ও রহিমা নামের অপর গৃহিনীরা বলেন, রাজহাঁস পালন করে অনেকে সংসারের বাড়তি খরচ বহন করছেন। গ্রামীণ জনপদে শেয়াল তাদের বড় শক্র। শেয়াল সুয়োগ বুঝে হামলা করে হাঁস ধরে নিয়ে যায়।

পাটাচোরা গ্রামের আব্দুল আলিম বলেন, গ্রামের মা-বোনেরা ভৈরব নদের মুক্ত পানিতে দীর্ঘদিন যাবত রাজহাঁস পালন করে আসছেন। রাজহাঁস পালনের ওপর তাদের কোনো প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে হাঁসের নানা ধরনের রোগ ও প্রতিকূলতার ফাঁদে পড়েনতারা। গৃহিনীদের এ বিষয় হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিলে হাঁস পালনে পারদর্শিতা বৃদ্ধি পেতো।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. এএইচএম শামিমুজ্জামান বলেন, রাজহাঁস একটি সৌখিন পোষ্য প্রাণী। বাড়িতে সাধারণভাবে অবকাঠমো তৈরি করে পালন করা হয়ে থাকে। রোগবালাই কম।