বাড়তি চাপে বিকল হচ্ছে ট্রান্সমিটার : দফায় দফায় ট্রিপ

: চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থায় বেহাল দশা!

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার নাজুক অবস্থা দফায় দফায় ফুটে উঠছে। গতরাতে বিতরণ কেন্দ্রের ব্রেকার বিকলের কারণে ৫টির মধ্যে একযোগে ৪টি ফিডারের বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতাল ফিডারে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধে গ্রাহকদের মধ্যে নাভিশ্বাস ওঠে। বাড়ে ক্ষোভ। রেলপাড়া রেলবাজার এলাকার ট্রান্সমিটার বিকলের কারণে গতকাল থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকা বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আজ বুধবার কখন নাগাদ বিদ্যুত সরবারাহ চালু হবে তাও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। তবে সন্ধ্যা নাগাদ বিদ্যুত চালু করা সম্ভব হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের এক কর্মকর্তা।

গতরাত ১০টা ২০ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা বিতরণ কেন্দ্রের ব্রেকার বিকল হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতাল, বড়বাজার, হাজরাহাটি ও কলেজ ফিডারের বিদ্যুত সরবরাহ। চালু থাকে মাত্র বিজিবি ফিডার। মেরামত করে পুনরায় বিদ্যুত সরবরাহ চালু করতে লেগে যায় এক ঘণ্টারও অধিক সময়। বিদ্যুত সরবরাহ চালু হয় রাত সাড়ে ১১টায়। একযোগে ৪টি ফিডারের বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পর গ্রাহক সাধারণে মধ্যে কৌতূহল দানা বাধে। খোঁজ নিতে গেলে বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয় ব্রেকার সমস্যা। সারাদিনে হাসপাতাল ফিডারে কমপক্ষে ৫ বার বিদ্যুতের আসা যাওয়া কেন? কন্ট্রোল রুম থেকে বলা হয়, ট্রিপ সমস্যা। বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদার কারণে দফায় দফায় ট্রিপ করে। সকাল ১০টা ৫ মিনিটে ট্রিপ করে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়। চালু হতে সময় লাগে ৫ মিনিট। ১১টা ৪৫ মিনিটে ফের ট্রিপ করে। ট্রান্সমিটারের সুইচ অন করতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। চালু হয় ১২টা ৫ মিনিটে। ১২টা ১০ মিনিটে আবারও ট্রিপ করে। মেরামত করে পুনরায় বিদ্যুত সরবাহ চালু করতে সময় লাগে পায় ৪৫ মিনিট। বিকেলেও অভিন্ন চিত্র ছিলো। বিকেল ৫টা ৫৬ মিনিটে ট্রিপ করে। তিন মিনিটের মাথায় আবারও চালু করা হয়। রাত ৯টার দিকে ট্রিপ করলে চালু করতে সময় লাগে প্রায় ২৫ মিনিট।

আগে ছিলো চাহিদা মতো বিদ্যুত না পাওয়ার সমস্যা। এখন সে সমস্যা গেলেও লো-ভোল্টেজ আর বাড়তি চাপে একের পর এক ট্রান্সমিটার বিকল হচ্ছে। গতকাল বিকেলে চুয়াডাঙ্গার রেলপাড়া, রেলবাজার এলাকার একটি ট্রান্সমিটার বিকল হয়। ফলে এলাকার গ্রাহক সাধারণকে গতরাতে বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় থাকতে হয়েছে। বিদ্যুত অফিসের কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, ট্রান্সমিটার মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। লোকবল বাইরে থেকে আসবে। দেখবে। মেরামত করবে। তারপর ওই এলাকায় বিদ্যুত সরবারাহ করা সম্ভব হবে। কতোটা সময় লাগতে পারে? নির্দিষ্ট করে সময় বলতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে সন্ধ্যা নাগাদ সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

কেন বিদ্যুতের বেহাল দশা? কেনই বা লো-ভোল্টেজ? সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লো-ভোল্টেজেরই বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে। সাবগ্রিড থেকে বিদ্যুতের মান বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। আর ট্রান্সমিটার বিকল হওয়ার সমস্যার জন্য বিদ্যুতের ওপর বাড়তি চাপকেই দায়ী করছেন চুয়াডাঙ্গা জোনের বিদ্যুত বিতরণ কর্তা। তিনি বলেছেন, অটো চার্জসহ বিভিন্ন কারণেই ক্যাপাসিটির চেয়ে বেশি চাপ দেয়ার কারণে ট্রান্সমিটারগুলোর বাড়তি ধকল সহ্য করতে হচ্ছে। কোনো কোনোটি বাড়তি ধকল সহ্য করতে না পেরে বিকল হচ্ছে। ট্রিপ সমস্যাও প্রকট আকারে দেখা দিচ্ছে। এসব সমস্যা আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সত্যি? ভবিষ্যতেই বলে দেবো!