কেরুজ মিলগেট গোডাউনে কৃষকদের ঋণের সার চুরি ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন

দর্শনা অফিস:বহুল আলোচিত কেরুজ মিলগেট গোডাউনে কৃষকদের ঋণের সার চুরির ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করেছে গঠিত তদন্ত কমিটি। বিভিন্ন টালবাহানার পর অবশেষে ১৬ দিনের মাথায় প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্তের শুরু থেকেই কমিটির বিরুদ্ধে উঠেছে নানা অভিযোগ। অভিযুক্ত আবু বক্করের পয়সার কাছে হার মেনে কী শেষ পর্যন্ত চোরের ছাপায় গেয়েই দাখিল করা হবে প্রতিবেদন?কৃষকদের নানা প্রশ্নের অবসান ঘটেছে। এখন দেখার বিষয় অভিযুক্ত চোরের পক্ষে নাকি বিপক্ষে দাখিল করা হয়েছে প্রতিবেদন। কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ কৃষকদের আখচাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ করণে গ্রহণ করছে নানামুখি পদক্ষেপ। ঠিক তখনো থেমে নেই অভিযুক্ত আবু বক্করের সার চুরির মহড়া। কাউকে তোয়াক্কা না করে কোনো শক্তির জোরে দীর্ঘদিন এ অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন তা বারবারই অজানা রয়ে যায়। মিলগেট সার গোডাউনের ইনচার্জ আবু বক্কর। গোডাউন ইনচার্জের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যেন আলাদিনের চ্যাড়াগের মতো রাতারাতি প্রচুর অর্থ ও সম্পদের মালিক বনে যান আবু বক্কর। চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কৃষকদের মধ্যে ঋণে সার বিক্রি নিয়মিত রয়েছে। বিঘা প্রতি একজন কৃষককে ১শ ৩৮ কেজি ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার বিক্রি করা হয়ে থাকে। এছাড়া মুড়ি আখের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১শ ৬৮ কেজি। কৃষকরা এ সার চিনিকলের মিলগেট গোডাউন থেকে উত্তোলন করে। মাড়াই মরসুমে আখের মূল্য থেকে ঋণকৃত সারের টাকা কর্তন করা হয়। প্রতিদিনের মতো গত চলতি মাসের ২ তারিখ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কৃষকরা সার উত্তোলন করতে আসে মিলগেট সার গোডাউনে। কৃষকদের জমির হিসেব মোতাবেক ঋনে দেয়া হয় ৫০ কেজির বস্তা ইউরিয়া ও টিএসপি সার। কৃষকরা উত্তোলনের পরপরই অন্যত্র ওজন করে সার। এতে ইউরিয়া সারের ৫০ কেজির বস্তায় ৫/৬ কেজি ও টিএসপি সারের ৫০ কেজির বস্তায় ৮/১০ কেজি কম পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আবু বক্করের শাস্তির দাবিতে মিলগেট সার গোডাউন এলাকায় কৃষকরা বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠান এডিএম আব্দুল কাইয়ুমকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত আবু বক্করের পক্ষে কথা বলে ব্যাপক সমলোচিত হয়েছেন আব্দুল কাইয়ুম। পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য গঠন করেন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় মিলের ডিজিএম সম্প্রসারণ আলাউদ্দিনকে। অন্যরা হলেন- সহকারী ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) আব্দুল ফাত্তাহ ও সহব্যবস্থাপক (হিসাব) শাহদত হোসেন। তিন সদস্যের এ কমিটি টানা ১৫ দিন তদন্ত কার্যক্রম চালিয়েছে। তবে তাদের তদন্তের শুরু থেকে হয়েছে সমলোচিত। তদন্তে ধীর গতি ও আবু বক্করের টাকার দম্ভক্তির কারণে কৃষকরা আশাহত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কী কৃষকদের আশার প্রতি ফলন ঘটবে নাকি আবু বক্করের টাকা জোরই জিতবে?এখন দেখার অপেক্ষামাত্র।

১৫ দিনের তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার সকালে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে কমিটি সদস্যরা। সূত্র বলেছে, ২ পাতার মূল প্রতিবেদনসহ ১৭ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। কি লেখা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে তা অজানা থাকলে আবু বক্করকে আগামী মাসের শুরুতেই গোডাউন ইনচার্জের পথ থেকে সরিয়ে নেয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা থাকছে কি-না তা পরিস্কার নয়। এ প্রতিবেদন কার্যকর করতে মিলের প্রশাসন বিভাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গতকালই।