দর্শনা অফিস:বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াতকারী যাত্রীবাহী মৈত্রী ট্রেন চলাচল শুরুর পর থেকেই চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। এক শ্রেণির সুবিধালোভী পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত থেকে অবৈধপন্থায় দেশে আনছে ভারতীয় মালামাল। এ নিয়ে বিজিবি,পুলিশ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মধ্যে ছিলো চাপা দ্বন্দ্ব। অবশেষে এ দ্বদ্বের বহির্প্রকাশ ঘটলো। বিজিবি এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ঘটলো কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা। কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা ও গোডাউন অফিসারকে টেনে হেঁচড়ে ও মারধর করে আটকের মাত্র আধঘণ্টার মাথায় ছেড়ে দিয়েছে বিজিবি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও বিজিবির মধ্যে মুখোমুখি অবস্থানের নিরসনে ভূমিকা নিচ্ছেন দুবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিজিবির পক্ষ থেকে সুরাহার পথে হাঁটলেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেঁকে বসছে বলেই শোনা যাচ্ছে। ভারতের কোলকাতা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী মৈত্রী ট্রেন দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশনে পৌঁছায় গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলাকালীন সন্দেহজনক এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি করে যশোর রিজিওয়ান সেক্টর বিজিবির একটি বিশেষ দল। এ নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে বিজিবির শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে বিজিবির হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন দর্শনা কাস্টমস সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও গোডাউন অফিসার আনোয়ার হোসেন। পরে শহিদুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনকে টেনে হেঁচড়ে বিজিবি সদস্য গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলো যশোর বিজিবির রিজিওয়ান সেক্টরে।
শহিদুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন বলেছেন,পথিমধ্যে উথলী পর্যন্ত পৌঁছুলে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিজিবির কাছে মোবাইল এলে গাড়ি ঘুরিয়ে ফের দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশনে আমাদের নামিয়ে দিয়ে যায়। তবে গাড়িতে তোলার পর থেকেই বিজিবি সদস্য দু কর্মকর্তার সাথে অসদচারণসহ শাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। কাস্টমসের দুকর্মকর্তা বিজিবি কর্তৃক লাঞ্ছিত ও আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট কাস্টমস ও দর্শনা কাস্টমস সার্কেলের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে স্ট্যাফরা ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। ফলে বেশ কিছু সময় কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোয়াতে হয়েছে যাত্রী সাধারণসহ সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের।
কাস্টমসের দুকর্মকর্তা তাৎক্ষণিক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন,কর্মরত অবস্থায় বিজিবির এহনেক কর্মকাণ্ডের বিচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ দ্বন্দ্বের সুরাহা করতে বিজিবির কুষ্টিয়া সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মাহমুদ,চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালাক এসএম মনিরুজ্জামান গতকালই বিকেলে দর্শনা কাস্টমস সার্কেলে আসেন। আলোচনায় বসেন কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে। এ বিষয়ে বিজিবির যশোর রিজিওয়ান সেক্টরের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল গাজী আসাদুজ্জামান বলেছেন,ঘটনাটি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাস্টমসের সহকারী কমিশনার কাজী বজলুর রশিদ বলেছেন,ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।