বেগমপুর/সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী গড়াইটুপি অম্রবুচি মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন। উদ্বোধনকালে তিনি মেলার ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মেলায় অপসংস্কৃতি বরদাস্ত করা হবে না।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের গড়াইটুপি অম্রবতি মেলা প্রতি বছরের ৭ আষাঢ় শুরু হয়। এবার কিছুটা এগিয়ে এনে আষাঢ়ের প্রথম দিনে মেলার উদ্বোধন করা হলো। চলবে টানা ১৪ দিন। রমজানের কারণেই কিছুটা এগিয়ে নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য মেলার আয়োজকদের। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রাশীদুল হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন। সভাপতিত্ব করেন তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেলা কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, অতীত ঐতিহ্য বাঙালি জাতির লালিত অহংকার। যা বুকে ধারণ করে মানুষ বেঁচে থাকে। প্রতিটি জাতি নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে খুঁজেপায় হারিয়ে যাওয়া গ্রামবাংলার অতীত ঐতিহ্য। এ মেলায় দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের সাথে এখানকার মানুষের গড়ে ওঠে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে সংস্কৃতি পালনের নামে যেনো অপসংস্কৃতি চর্চা না হয়।গড়াইটুপি মেলা আমাদের জেলার পরিচিতি তুলে ধরতে বেশ অবদান রেখে আসছে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রাশীদুল হাসান বলেন, চিত্তবিনোদনের জায়গায় মানুষ তার মনের খোরাক মেটাতে আসে। ফেরার পথে পরিবারের সদস্যদের জন্য দু’হাত ভরে নিয়ে যায় খেলনা থেকে শুরু করে সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ফলে এ মেলাতে মানুষ যাতে অবাধে আসতে পারে প্রশাসনের পাশাপাশি মেলা আয়োজক কমিটির সার্বিক সহযোগিতা থাকতে হবে।তবে খেয়াল রাখবেন সংস্কৃতি ধারণের নামে অপসংস্কৃতি চর্চার ঘটনা ঘটলে তা মেনে নেয়া হবে না।
জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেলার ইজারাদার হাসানুজ্জামান মানিক, আশিকুর রহমান, সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক শুকুর মিয়া, শ্রী শংকর শর্মা, স্থানীয় আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। মেলার আয়োজকেরা বলেন, তিতুদহ ইউনিয়নের গড়াইটুপির মেলা আমাদের অহংকার। এ অহংকারকে আমরা কোনোভাবেই কলুষিত হতে দেবো না। তাই মেলাপ্রেমী মানুষের চাহিদা মাথায় রেখে এবারের মেলায় থাকছে জীবজন্তুতে ভরা সার্কাস, গ্রামবাংলার সামাজিক যাত্রাপালা, পুতুল নাচ, কাঠ-বাঁশ বেতের দোকান, মিষ্টির দোকান, শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনাপাতির দোকানসহ আকর্ষণীয় সব আয়োজন। মেলা আয়োজক পক্ষ মেলায় হরেক রকম জুয়ার আয়োজনের বিষয়টি অবশ্য গোপনই রেখেছে। এ অভিযোগ এলাকার সচেতন মহলের। যে গড়াইটুপি মেলা এলাকার ঐতিহ্য, জামাই মেলা হিসেবে পরিচিত, সেই মেলা জুয়ার মেলা হলে ঐতিহ্যের অহংকারে কালি মাখায়। প্রশাসনকে এদিকে নজর রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকার সচেতনমহল।