কেরুজ মিলগেট গোডাউনে কৃষকদের সার চুরি ঘটনার দেড় সপ্তা পার

 

 

তদন্তে গড়িমশি :অভিযুক্ত গোডাউন ইনচার্জ আবু বক্কর বহাল তবিয়তে

দর্শনা অফিস:‘হাতি ঘোড়া গেলো তল, ভেড়া বলে কতো জল’এমনই দম্ভক্তি কেরুজ মিলগেট সার গোডাউন ইনচার্জ আবু বক্করের। অভিযোগ উঠেছে, আবু বক্কর দম্ভক্তি করে বলেছেন, কতো বড় বড় চুরি করে পার পেয়ে গেলাম। সে তুলনায় এতো ছোট চুরি। এতে আর কী হবে। সবই ম্যানেজ হয়ে যাবে। শুধু ক’টাকা খরচা হবে। এ খরচা সাগর থেকে বালতিতে পানি তোলার মতোই। কেরুজ মিলগেট গোডাউন থেকে কৃষকদের সার চুরির ঘটনার টানা ১০ দিন পেরিয়ে গেছে। গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত গেছে ঝিমিয়ে। তদন্ত কমিটির গড়িমশিতে উঠেছে প্রশ্ন। তাহলে কী আবু বক্করের দম্ভক্তিই সত্যি। সে কি কিনে ফেলেছে তদন্ত কর্তাদের?এখনো দেখার অপেক্ষার পালা শেষ হয়নি। তবে মিলের কর্তারা রয়েছেন কঠোর অবস্থানে। তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পরিবর্তন করা হতে পারে তদন্ত কমিটি।

যতোই দিন যাচ্ছে তদন্ত কমিটির ওপর ততই আস্থা হারাচ্ছে আখচাষিরা। ঘটনাটি স্পর্শ কাতর ও আলোচিত হলেও কমিটির একজন ছুটির অজুহাত দেখিয়ে চলছে তদন্ত কার্যক্রমের ঝিমগতি। আসলে তদন্তের নেপথ্যে কী রয়েছে অশুভ শক্তি?আখচাষিরা কী শেষ পর্যন্ত সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হবে?নাকি অভিযুক্ত সার চোর আবু বক্করের পক্ষে সাফায় গাইতে তদন্ত কমিটিকে আখচাষিদের রোষানলে পড়তে হবে। আখচাষিরা বলেছে, সার চুরির ঘটনা হাতেনাতে ধরা পড়েও কীভাবে অভিযুক্ত গোডাউন ইনচার্জ একই স্থানে বহাল তবিয়তে রয়েছেন?তবে কি আবু বক্করের দম্ভক্তিই সঠিক?

কেরুজ সার গোডাউন থেকে আখ চাষিদের ঋণের সার চুরির ঘটনা ঘটে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ প্রথা শুরু করেছেন গোডাউন ইনচার্জ আবু বক্কর ও জালাল উদ্দিন। কৃষকদের সার চুরির অভিযুক্ত দুচোরের হোতা হিসেবে নেপথ্যে রয়েছেন মিলের ডিজিএম ঋণ সম্প্রসারণ এসএম বাকী। তলে তলে অনেক দূরেই এগিয়েছেন এসএম বাকী। তদন্ত কমিটির তদন্তে কী তার নাম বেরিয়ে আসছে নাকি তিনি ধরা ছোয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। বেশ কিছুদিন আগে জালাল উদ্দিন অবসরগ্রহণ করলে অদৃশ্য হাতের ইশারায় তিনি ওই গোডাউনের চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। অবশেষে গত সোমবার গোডাউনে কৃষকদের সার চুরির ঘটনায় সে পদটি হারিয়েছেন জালাল উদ্দিন। সার চুরি করে কৃষকদের হাতেনাতে ধরা পরেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন আবু বক্কর। কোন খুঁটির জোরে তিনি একই স্থানে দীর্ঘদিন দায়িত্বে রয়েছেন তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আবু বক্করসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সার চুরি ঘটনার পরদিন থেকে শুরু হয়েছে তদন্ত কার্যক্রম। ৩ সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন মিলের ডিজিএম সম্প্রসারণ এসএম আলাউদ্দিন। তদন্ত শুরুর পর থেকে তদন্তে বেশ গতি খেয়াল করা গেলেও হঠাত করেই ঝিমিয়ে গেছে কমিটির তদন্ত কার্যক্রম। এ ক্ষেত্রে কমিটির একজনের অনুপুস্থিতি বলে দাবি করেছেন কমিটির প্রধান। টানা ১১ দিনেও শেষ হয়নি তদন্ত কার্যক্রম। কবে নাগাদ শেষ হচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে বলতে পারছে কমিটির পক্ষ থেকে।

এ ব্যাপারে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান বলেছেন, কৃষকদের ঠকিয়ে কেউ পার পাবেনা। কোনো কারণে কেউ যদি চোরের পক্ষে সাফায় গায় তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্পূণ্যতা করা হবে। প্রয়োজনে কমিটি পরিবর্তন করে পূণরায় কমিটি গঠন করে সঠিক তদন্ত করা হতে পারে। মিলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) বলেছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর বোঝা যাবে। তবে আখ চাষিরা মিলের প্রাণ। সেই চাষিদের জন্য কর্তৃপক্ষ যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই সাথে অভিযুক্ত আবু বক্করকে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর তার বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হতে পারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।