ঝিনাইদহ অফিস: মায়ের সাথে অভিমান করে ১০ বছরের বালক বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। আর তাকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ তুলে পিতা তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন থানায়। পুলিশও তৎপর হয়ে দু এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে সন্দেহভাজন হিসেবে পরীক্ষার আগের দিন গ্রেফতর করে পাঠায় আদালতে। এতে পরদিন তারা কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা দিতে পারেনি। আর ওই পরীক্ষার দিনই পাওয়া যায় বালকটিকে। পরে দু পরীক্ষার্থী ছাড়া পায়। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের ঘটনা এটি।
ঝিনাইদহের আইনজীবী আতিয়ার রহমান বলেন, পরীক্ষার আগের রাতে গ্রেফতার করা শিক্ষার্থীর পরীক্ষার দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারে না পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, পুলিশের দায়িত্ব গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠানো। আর এরা আসামি না হলেও আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, খলিসাকুণ্ডু গ্রামের ১০ বছরের ওই বালক ২৩ মে মাদরাসার উদ্দেশে বেরিয়ে আর ফেরেনি। ২৪ মে তার বাবা কামাল হোসেন হরিণাকুণ্ডু থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ২৮মে তিনি তাহেরহুদা গ্রামের মো. স্বপন (২০), আতিক হোসেন (২০) ও উজ্জ্বল হোসেনকে (২২) আসামি করে অপহরণ মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, আসামিরা মুঠোফোনে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছেন। টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই উলফামুল ইসলাম ২৮মে রাতেই আতিক হোসেন ও উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেফতার করেন। তারা দুজনও এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তবে মানবিকের ছাত্র হওয়ায় তাদের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এরপর এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহে পুলিশ আটক করে কুলবাড়িয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে। এরা দুজনেই বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র। তারা যে রাতে আটক হয়, তার পরদিন সকালে তাদের কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা ছিলো। জাহিদুল ইসলামের ভাই সাইদুল ইসলাম জানান, পরীক্ষার বিষয়টি পুলিশকে জানালেও কারাগারে পাঠিয়ে দেয়ায় পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে ২৯মে সকালে যশোর শহরের একটি হোটেলে কাজ করা অবস্থায় নিখোঁজ বালকটিকে পাওয়া যায়। ৩০মে বালকটি ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবিন্দ দিয়েছে বলে এসআই জানিয়েছেন। আর গত রোববার গ্রেফতার সবাই জামিনে মুক্তি পান।