দামুড়হুদা কালিয়াবকরির মুকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা : আমবাগানে লাশ

 

 

পুলিশের দাবি- সে ছিলো সন্ত্রাসী বিল্লাল গ্যাঙের সদস্য : অভ্যন্তরীণ কোন্দল অথবা প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ গেছে তার

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদা কালিয়াবকরির মুকুলকে (৩৪) ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গ্রামের অদূরবর্তী ভুড়োরগাড়ি মাঠের একটি আমবাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের অদূরেই পড়ে ছিলো তার ব্যবহৃত ভাঙাচুরা মোবাইলফোন।

মুকুলকে তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগ কর্মী ও সাধারণ কৃষক বলে দাবি করলেও দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার মশিউর রহমান বলেছেন, মুকুল এলাকার চিহ্নিত বিল্লাল গ্যাঙের সক্রিয় সদস্য ছিলো। তার বিরুদ্ধে ট্রিপল মার্ডারসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

মুকুলের পিতা চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়নের কালিয়াবকরি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নূরু খা বাদী হয়ে গতকালই সন্ধ্যায় দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বলা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আসামিরা মুকুলকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ বলেছে, মুকুল এলাকার সন্ত্রাসী গ্যাঙের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অথবা প্রতিপক্ষের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে। তদন্ত চলছে। মুকুলকে তার পরনের লুঙ্গি ছিড়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

পরিবারের সদস্যরা বলেছে, মুকুল গত সোমবার বিকেলে কালিয়াবকরি বাজারের ক্রিকেট খেলা দেখার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তার বড় ভাই আকরামের সাথে বাজারে দেখা হয়। এরপর সে কাওসারের সাথে জরুরি কাজের কথা বলে চলে যায়। রাতে বাড়ি ফেরেনি। মুকুলের স্ত্রী নারগিস পিতার বাড়িতে থাকার কারণে মুকুলের মায়ের ধারণা হয়, রাতে সে নিশ্চয় তার শ্বশুরবাড়ি পার্শ্ববর্তী কাঁঠালপোতায় গেছে। সকালে খবর পায় গ্রামের অদূরবর্তী ভুড়োগাড়ির মাঠের সামছুদ্দিনের আমবাগানে মুকুলের লাশ পড়ে রয়েছে। খবর দেয়া হয় পুলিশে। দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার মশিউর রহমান, ইন্সপেক্টর ফকির আজিজুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে নেয়া হয়। দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার নিকটজনদের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। বিকেলে গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের কালিয়াবকরী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম ওরফে নূরু খাঁর ছেলে মুকুল ৩ ভাইয়ের মধ্যে সকলের ছোট। বড়ভাই আকরাম হোসেন ব্যবসায়ী, মেজভাই আশরাফ হোসেন সৌদী প্রবাসী এবং মুকুল কৃষিকাজ করতো। মুকুল বিবাহিত। সে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জনক। ছেলে নাহিদ (৭)কালিয়াবকরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্র। একমাত্র মেয়ে সুরাইয়ার বয়স ৩ বছর। স্ত্রী নারগিছ খাতুন গৃহিনী।