দামুড়হুদায় রোপা পদ্ধতিতে পাট আবাদ করতে তোড়জোড় শুরু

লোকসান এড়াত অল্প খরচে অধিক ফলনের আশা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা লোকসান এড়াতে অল্প খরচে অধিক ফলনের আশায় রোপা পদ্ধতিতে পাট আবাদ করতে তোড়জোড় শুরু করেছেন। এবার এ জনপদে বৈশাখ মাসে ও জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে প্রচণ্ড খরার মধ্যে পাটচাষিরা পানিসেচ দিয়ে পাট রোপণ করতে শুরু করেন। এ জনপদে সাধারণত অধিকাংশ পাটচাষিরা চৈত্র ও বৈশাখ মাসে পাট বুনে থাকেন। লোকসান এড়াতে অল্প খরচে অধিক ফলনের কারণে রোপা পদ্ধতিতে পাট আবাদ চাষিদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

দামুড়হুদা উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের আনছার আলী মোল্লা বলেন, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে এখন পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। মনে করেছিলাম জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিকে বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের মুক্তারপুর পুলের মাঠে সেচ দিয়ে রোপা পদ্ধতিতে দেড় বিঘা জমিতে উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জালালউদ্দিনের সার্বিক সহযোগিতায় পাটরোপণ শেষ করেছি। লোকসান এড়াতে অল্প খরচে অধিক ফলনের জন্য রোপা পদ্ধতিতে পাট আবাদ লাভজনক। এ পদ্ধতিতে পাট আবাদ করলে পাটের উৎপাদন খরচ অনেক কম হয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চৈত্র মাসে বা বৈশাখ মাসে বৃষ্টি না হলে সেচ দিয়ে পাট বুনতে হয়। পাটের চারা গাছান হলে কয়েকবার পরিচর্চা নিয়মিত করতে হয়। পরিচর্চা কমতি হলে পাটের উৎপাদন আশানুরূপ হয় না। আর রোপা পদ্ধতিতে পাট আবাদ করলে পাট বীজ লাগে না । মাঠের অন্য জমির বুনানী পাটের অতিরিক্ত চারা তুলে এনে জমিতে পানি সেচ দিয়ে ধানের মতো করে রোপণ করলেই চারা লেগে যায়।

তুলনামূলকভাবে পরিচর্চা কম করতে হয়। জমিতে সকল স্থানে চারা লাগানো যায়। অপর দিকে পাট বুনানী করলে জমির সকল স্থানে বীজ না পড়ার কারণে সমাংশে চারা বের না। ফলে উৎপাদন কমে যায়। রোপা পদ্ধতিতে চার লাগালে পাটের গাছান একই পরিমাণ হয়। রোগবালাই কম হয়। সমস্ত জমিতে সার ছেটানো সহজ হয়। তিনি আরও বলেন, এবার পাটের জমিতে বোর ধান ছিলো। বৈশাখ মাসের শেষে ধান কেটে সেচ দিয়ে রোপা পাট রোপণ করেছি।তার মতো একই গ্রামের গড়গড়ি মাঠে বাবুল, মজনু,নবীসহ অনেকে রোপা পদ্ধতিতে পাট রোপণ করেছে।রোপা পদ্ধতিতে পাটচাষ ক্রমান্বয়ে দিন দিন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকায় এবার চলতি পাটচাষ মরসুমে ৭ হাজার ২শ’৫০ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার প্রচণ্ড খরার কবলে চাষিরা পাট আবাদ শুরু করেছেন। পাটচাষের ভরা মরসুমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে জমিতে সেচ দিয়ে পাট বুনানী শুরু করেছে। লাইন করে রোপা পদ্ধতিতে পাট আবাদ করলে অল্প খরচে অধিক ফলন পাওয়া যায়। সেইসাথে পরিচর্চা ও উৎপাদন খরচ কম হয়। সুষম সার ব্যবহার করার জন্য পাটচাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সুষম সার ব্যবহার করলে পাটের উৎপাদন ভালো হয়।