যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি : সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩নং সতর্ক সঙ্কেত

 

স্টাফ রিপোর্টার: যশোর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে গতকালও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তবে দু দফা বৃষ্টির সম্ভাবনা ফুটে ওঠে। আবহাওয়া অধিদফতর অবশ্য গতকাল বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বলেছে, চলমান তাপপ্রবাহ কমে যাচ্ছে।

গতকাল শনিবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিলো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। ভ্যাপসা গরমে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের প্রাণিকূল হাঁপিয়ে ওঠে। অবশ্য বিকেল থেকে কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে। আবহাওয়া অধিদফতর পূর্বাভাসে বলেছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মরসুমি বায়ু আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টেকনাফ উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, মাইজদীকোর্ট, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝরি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কমে যেতে পারে।

রাজধানীসহ দেশের অনেক জেলায় স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। আজ রোববারওঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।গতকাল শনিবার ঢাকায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এদিন রাজধানীতে প্রায় আড়াই ঘণ্টাধরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়। প্রশান্তি লাভের পাশাপাশি বৃষ্টিতেসাময়িক দুর্ভোগে পড়ে রাজধানীবাসী। বজ্রপাতে গফরগাঁওয়ে এক কৃষক ও যশোরে একনারীর মৃত্যু ঘটে। আজ রোববার সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ডিগ্রি সেলসিয়াসহ্রাস পেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলাসমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালাসৃষ্টি হতে শুরু করেছে। এতে সাগর এখনও মাঝারি ধরনের উত্তাল রয়েছে।

এদিকে বৃষ্টি কামনায় মেহেরপুর গাংনীর কড়ুইগাছি গ্রামে মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতের আশায় দু রাকাত ইশতেস্কার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে গাংনী গ্রামের মাঠে নামাজ আদায় করে চোখের পানি ফেলে রহমত কামনা করেন তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত মানুষ। দোয়া পরিচালনা করেন কড়ুইগাছি মসজিদের ইমাম হাফেজ কারী ওয়াহেদুজ্জামান সেলিম। নামাজের আয়োজন করেন ইউপি সদস্য বকুল হোসেন। অপরদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ উপজেলার গাড়াডোব গ্রামে ইশতেস্কার নামাজ আদায় করা হয়। এসময় প্রধান সড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে জিকির করেন মুসল্লিরা। নামাজ ও দোয়া পরিচালনা করেন পুকুরপাড়া মসজিদের ইমাম মাওলানা ইয়াছিন আলী।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে,জীবননগর উপজেলায় বৃষ্টির জন্য ইশতেস্কার নামাজ আদায় করা হয়েছে। গত শুক্রবার আন্দুলবাড়িয়ায় ও গতকাল শনিবার বেলা ১১টার সময় বাঁকা গ্রামে খোলা মাঠে উত্তপ্ত রোদের মধ্যে মানুষ বৃষ্টির জন্য ইশতেস্কার নামাজ আদায় ও বিশেষ মোনাজাত করেন। তীব্র খরতাপে উপজেলার মাঠ-ঘাট ফেটে চৌঁচির হয়ে গেছে। চারিদিকে খাঁ খাঁ করছে। প্রাণী জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড খরতাপ ও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে উপজেলায় কমপক্ষে ৯ জন নারী-পুরুষ মারা গেছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলার প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন শতাধিক শিশু চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে সকল সড়ক মহাসড়ক বাজার মাঠ-ঘাট জনমানবশূন্য হয়ে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না।