গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার দিগলকান্দি গ্রামে হামলার জের ধরে পুরুষ শূন্য কচুইখালী গ্রামের নারী ও শিশুরা চরম আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। দিগলকান্দি গ্রামের সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে হয়ে গেছে তাদের। গতকাল শনিবার কচুইখালী গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যেতেও বাধা দেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ তুলেছেন কচুইখালী গ্রামের অভিভাবকরা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কচুইখালী গ্রামের লোকজনের দিগলকান্দি গ্রামে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়। কচুইখালী গ্রামের ১৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকেই কচুইখালী গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে। দিগলকান্দি গ্রামের মানুষের প্রতিরোধ ও পাল্টা হামলার প্রস্তুতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েন কচুইখালী গ্রামের মানুষ। শুক্রবার সকালে মেহেরপুর শহরের উদ্দেশে যাওয়ার পথে দিগলকান্দি গ্রামের মানুষের হাতে লাঞ্ছিত হন কয়েকজন নারী। লাঠিসোঁটা নিয়ে তারা দিগলকান্দি গ্রামের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয়। পূর্বমালসাদহ-বারাদী সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে যায় কচুইখালী গ্রামবাসীর। এরসাথে যোগ হয় ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে গমনে বাধার ঘটনা। গতকাল শনিবার কচুইখালী গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে আতঙ্কেও অনেক ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয়সূত্রে আরো জানা গেছে, দিগলকান্দি গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০-৬০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে কচুইখালী গ্রামের। পার্শ্ববর্তী বর্ষিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীও রয়েছে। দিঘলকান্দি গ্রামের মানুষের বাধার মুখে গতকাল থেকেই তারা বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি। এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। তারপরও বেপরোয়া আচরণ করছেন দিগলকান্দি গ্রামের কিছু মানুষ।
অভিযোগে আরো জানা গেছে, দিগলকান্দি গ্রামের কেসমত আলী, ওলি মিয়া ও আবু সাইদ এবং দিগলকান্দি গুচ্ছগ্রামের সবদুল হোসেন, রফিক ও আব্দুল্লাহ বিদ্যালয়ে গমনের বাধার নেতৃত্বে রয়েছেন। তাদের নির্দেশে লাঠিয়াল কিছু লোক ভোর থেকে রাত অবধি মোড়ে মোড়ে পাহারা করছেন। এর আগে শুক্রবার সকালে গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী কচুইখালী গ্রামের কয়েকজনের বাড়িতেও লুটপাটের নেতৃত্ব দেন তারা। তবে অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে কচুইখালী গ্রামবাসী হামলা করে দিগলকান্দি গুচ্ছগ্রামে। এসময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত হয় ২০ জন। এদের মধ্যে দুজন রাজশাহী ও একজন কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আরো কয়েকজন মেহেরপুর জেনারেল হাসপতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই রাতেই গুচ্ছগ্রামের ভাষান আলী বাদী হয়ে কচুইখালী গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদকে প্রধান আসামি করে ৫০ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন।