চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে তীব্র খরায় হাঁপিয়ে উঠেছে মানুষ : মিলছে না স্বস্তি
স্টাফ রিপোর্টার: সকাল হতে না হতেই চড়ে যাচ্ছে রোদ। তীব্র খরায় ক্ষেতের ফসল পুড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না পেয়ে মাটি চিরে চৌচির। মানুষসহ প্রাণিকূল হাঁফিয়ে উঠেছে। কোথাও স্বস্তি মিলছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিটেফোঁটা বৃষ্টির দেখা মিললেও চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টির দেখা নেই। আবহাওয়াবিদেরা গতকালও চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির তেমন পূর্বাভাস দিতে পারেননি। তবে এলাকার কিছু প্রবীণ ব্যক্তি আজকালের মধ্যে বৃষ্টি হতে পারে বলে আশা করে বলেছেন, পূর্ব বাতাস তথা পূবাল এসেছে, এখন দখিনি মেঘের দেখা পেলেই বৃষ্টি হবে। আবহাওয়াবিদেরা অবশ্য এ মন্তব্যকে তেমন আমলে না নিয়ে বলেছেন, এলাকায় এখনও বৃষ্টির অনূকূল পরিবেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যেমনটি বৃষ্টির অনুকূল টেকনাফ উপকূলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায়। তবে পূবালির প্রভাবে গঙ্গেয় ঘূর্ণাবর্ত যেকোনো সময় গড়ে উঠে স্থানীয়ভাবে বৃষ্টি হতেও পারে।
আবহাওহা অধিদফতর জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে এবং দুর্বল হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ রূপে অবস্থান করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পশ্চিম মরসুমীবায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে।রাজশাহী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা এবং কুষ্টিয়া অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্ট অঞ্চলসহ রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মাইজদীকোর্ট ও ফেনী অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য দোয়া খায়ের, তোবারক বিতরণ, কাদা মেখে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন অব্যাহত রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশপাড়া যুবসমাজ বৃষ্টির জন্য বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। গতকাল শুক্রবার বাদ এশা পলাশপাড়া কদমতলায় এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের দোয়া পরিচালনা করেন পলাশপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাও. নাসির উদ্দিন। দামুড়হুদার চিৎলা-গোবিন্দহুদায় বৃষ্টির জন্য ইশতেসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চিৎলা-গোবিন্দহুদা ঈদগা মাঠে চিৎলা-গোবিন্দহুদা গ্রামের আয়োজনে ওই ইশতেসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে অংশ নেয়া দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজু আহমেদ রিংকু জানান, আমরা শুধুমাত্র চিৎলা ও গোবিন্দহুদা গ্রামবাসী মিলে এ নামাজের ব্যবস্থা করেছি। নামাজে কোমল শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে যুবক ও বৃদ্ধ মিলিয়ে প্রায় দুহাজার মানুষ অংশ নেয়। নামাজ শেষে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে বৃষ্টির জন্য দীর্ঘক্ষণ মোনাজাত করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন চিৎলা হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ সেলিম উদ্দিন।
তীব্র দাবদাহ আর অসহ্য গরমে বিষিয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ। গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৪০ দশমিক ৬, চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ২ এবং রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। রাজশাহী, বগুড়া এলাকায় বৃষ্টিতে কিছু স্বস্তি এনেছে। তাপমাত্রাও হ্রাস পেয়েছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল বগুড়ায় ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। চুয়াডাঙ্গা গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।