মহাসিন আলী:মেহেরপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে কচু। আউশ এ কচু বাজারে খুচরা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগাম এ কচুর মূল্য পেয়ে চাষিরা বেজায় খুশি। আর একমাস পরে বাজারে আসবে সুস্বাদু আমন কচু। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও কচুর মূল্য বেশি পাবেন এবং লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা এ জেলার চাষিদের।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাবমতে এ বছর জেলায় ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের কচুর চাহিদা রয়েছে। আবহাওয়ার প্রতিকুলতার পরও এ জেলার চাষিরা কচুর ভালো দাম পাবেন এবং লাভবান হবেন এমনটি প্রত্যাশা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের। মেহেরপুর শহরের নতুনপাড়ার কচুচাষি লিটন। তিনি এবছর সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিবিঘা কচু চাষে ১৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু মেহেরপুরের আকাশে বৃষ্টি না থাকায় এ বছর খরার কবলে পড়েছে কচু। তাই একদিন বাদে একদিন পরপর জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর প্রতি বিঘা কচু চাষে খরচ পড়ছে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। তিনি মনে করেন আষাঢ়ের প্রথমে চাষিরা পর্যাপ্ত পরিমাণ কচু বাজারে তুলতে পারবেন। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও এ জেলার উৎপাদিত শশট্রাক কচু রাজধানী ঢাকা, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম, বরিশাল, নোয়াখালী ও ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হবে। আগাম কচুর মতো দাম না পেলেও ভালো দাম পাবেন বলে মনে করেন তিনি।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি দেড় বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছেন। প্রতিবিঘা জমিতে ৮০ মণ থেকে ১২০ মণ কচু উৎপন্ন হয়। বর্তমান বাজারে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে কচু বিক্রি হচ্ছে। আমন কচু বাজারে এলে কচুর দাম কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, গত বছর তিনি ৪৫ হাজার টাকা বিঘা দামে ক্ষেতের কচু বিক্রি করেছিলেন। প্রকৃতির বৈরি মনোভাবের কারণে কচু চাষে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও লাভবান হওয়ার আশাবাদী তিনি।
মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের নতুনপাড়ার মাদার ঘানী। এবছর তিনি ৫ বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছেন। তিনি বললেন, কচু চাষে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির পানি না থাকায় কচুর পাতা পুড়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে একদিন পরপর কচু ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে। এবছর প্রতিবিঘা কচু চাষে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। আবার বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফলন ভালো না হলে চাষিকে পথে বসতে হবে। গত বছর প্রচুর কচু উৎপন্ন হয়েছিলো। শেষমেশ বাজারে ক্রেতা না থাকায় তার মতো অনেক কচুচাষিকে বিপদে পড়তে হয়। গেলো বার তার ১০-১২ বিঘা জমিতে কচু ছিলো। শেষের দিকে তাকে প্রতি বিঘা কচু ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।