মহাসিন আলী:একটানা খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে মেহেরপুর জেলায় লিচুর ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। একদিকে লিচু শুকিয়ে গেছে অপরদিকে ফেটে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে। এতে চাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আঁটি লিচুর। বোম্বাই লিচু সাইজে ছোট হলেও উল্লেখযোগ্য হারে ফেটে বা ঝরে নষ্ট হয়নি।
মেহেরপুর জেলায় সাড়ে চারশ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। বড় বড় বয়স্ক গাছগুলো আঁটি জাতের হলেও নতুন যে সব বাগান গড়ে উঠছে সেগুলো বোম্বাই ও চায়না থ্রি জাতের। গত বছর জেলায় প্রায় ৫ লাখ কাউন লিচু উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য ছিলো প্রায় দেড়শকোটি টাকা। এ বছর খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে লিচু সাইজে ছোট, দাগী ও ফেটে নষ্ট হওয়ার কারণে আড়াই থেকে তিন লাখ কাউন ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। যার বাজার মূল্য হবে ৭০ থেকে ৭৫ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, লিচুর ফলন ব্যাহত হওয়ার কারণে তাদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে।
মেহেরপুর শহরের লিচু ব্যবসায়ী আলম জানান, খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে একদিকে লিচু মোটা হয়নি। অন্য দিকে কালো কালো দাগ হয়ে ফেটে ঝরে পড়ছে। এতে ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের ক্ষতির শিকার হবেন। লিচু চাষিরা আরো জানান, যে গাছে ১৫-১৬ কাউন লিচু পাওয়ার কথা সে গাছে তিন থেকে চার কাউন লিচু পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সব নষ্ট হয়ে গেছে। যেগুলো বাজারজাত করা হয়েছে সেগুলোও বিক্রি এক হাজার ৬০০টাকা থেকে ২ হাজার টাকা কাউন দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছর বিক্রি হয়েছিলো ২ হাজার ২০০টাকা থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে। শের আলী জানান, সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আঁটি লিচু। বোম্বাই লিচু মোটামুটি ভালো আছে। তবে বৃষ্টির অভাবে সাইজ ছোট হয়েছে। বোম্বাই লিচু থেকে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখা যাবে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ জেলায় আঁটি লিচুর গাছের সংখ্যা কম। ক্ষতি মূলত আঁটি জাতের লিচুতে হয়েছে। বোম্বাই বা চায়না থ্রি জাতের লিচু ভালো আছে। খরার কবল সামলাতে চাষিদের সেচের পরামর্শ দেয়া হয়েছিলো। তাছাড়া এখানকার চাষিরা বোরণ সার ব্যবহার করে না। বোরণ সারের অভাবে লিচু ফেটে নষ্ট হচ্ছে। আগামীতে চাষিদের বোরণ সার প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।