স্টাফ রিপোর্টার: গুম-খুন-অপহরণেরবিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে আজ থেকে ব্যতিক্রমী একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েমাঠে নামছে উজ্জীবিত বিএনপি। এর অংশ হিসেবে আজ বিকেল ৩টায় রাজধানীরইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের বরেণ্যব্যক্তি ও বিভিন্ন পেশার মানুষের উপস্থিতিতে ফিরিয়ে দাওশিরোনামে এসম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন খালেদা জিয়া।
মহানগর বিএনপির এক নেতা জানান, ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে র্যাববিলুপ্তির দাবিতে এ সম্মেলন আয়োজন করা হলেও এতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেও পরে গুম হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের হাজির করা হবে। তারাস্বজনদের গুমের ঘটনার বর্ণনা দেবেন। দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজেরপ্রতিনিধি, বিভিন্ন পেশাজীবী ছাড়াও দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এবং সিনিয়র নেতারা এ অনুষ্ঠানেউপস্থিত থাকবেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম জানান, দেশের ভয়াবহগুম-খুন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এই ব্যতিক্রমী সম্মেলনের আয়োজন করাহয়েছে। এ সম্মেলনে ৫ জানুয়ারির তথাকথিতনির্বাচনের আগে ও পরে গুম হওয়ানেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। তারা স্বজনদের গুমেরহৃদয়বিদারক ঘটনার বর্ণনা দেবেন। তিনি বলেন, এই গুম এখন শুধু রাজনৈতিকনেতাদের ক্ষেত্রে নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও আতঙ্কের বিষয়। তাই এই ভয়াবহমানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে দেশকে মুক্ত করতে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস প্রয়োজন।এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তারা সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে দেশে চলমানগুম, খুন, অপহরণসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেছে বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ মে মুন্সিগঞ্জে জনসভার মধ্যদিয়ে ঢাকারবাইরে বিএনপির জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি শুরু হবে। কিন্তু এর আগে ঢাকায়সব শ্রেণির মানুষের উপস্থিতিতে এ কর্মসূচির সূচনা শুরু করতে চান খালেদাজিয়া। এখান থেকে সরকারে সব অপকর্ম সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরবেন তিনি। এরসূত্র ধরে শনিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে আইনজীবীদেরসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এমমাহবুব উদ্দিন খোকন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এছাড়া একই ইস্যুতে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশ, অনশন ও লংমার্চেরমতো কর্মসূচি পালন করবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এসব কর্মসূচি থেকে দেশেরআইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সরকারের ব্যর্থতা, সমপ্রতি ঘটে যাওয়া নৃশংসহত্যাকাণ্ডে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণসহ দলেরনিখোঁজ নেতাকর্মীদের সন্ধান পেতে জোর দাবি জানাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এসবসভা-সমাবেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সংশয় থাকলেও কর্মসূচি পালনেদৃঢ়প্রতিজ্ঞ দলটির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক নেতা জানান, এখনই সরকার পতনের আন্দোলনেযাবে না বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট। দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধেমামলার আইনি মোকাবেলা, সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে বিএনপিকে একটি শক্তিশালীভিতের ওপর দাঁড় করানোসহ দল গোছানোর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছেনচেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সবার আগে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিতেজনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গুম-খুনের মাধ্যমে দেশকে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করা হয়েছে। রক্ষীবাহিনীরআদলে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকেঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। এটা এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, ২৮ মে মুন্সিগঞ্জে জনসভা করবেন খালেদা জিয়া। এরপররমজানের আগ পর্যন্ত রূপগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় সমাবেশ করবে স্থানীয় বিএনপি। চেয়ারপারসন খালেদাজিয়াসহ দলের সিনিয়র নেতারা এসব জনসভায় উপস্থিত থাকবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকার তাদের দাবি নামানলে আগামীতে বিএনপি গুম, খুন অপহরণের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে যাবে।