জীবননগর কাটাপোলের শতবর্ষীওমের আলীমুক্তিযোদ্ধা সনদ চান

 

এমআর বাবু: জীবননগর উপজেলার পুরন্দপুর গ্রামের শতবর্ষী ওমের আলীর (৯৫) দাবি তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় মাধবপুর-বালিহুদা নদীর ঘাটে তিনি নৌকা বইতেন। এ নৌকা দিয়ে প্রতিদিন তিনি জীবনবাজি রেখে বহু মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা পয়সায় নৌকায় পার করাসহ নানাভাবে তাদের সহযোগিতা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে পার করায় রাজাকার ও পাকবাহিনীর রোষানলে পড়েন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করে দেশ স্বাধীনে ভূমিকা রাখায় তিনি নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও ভাতা দাবি করেছেন। এ বয়সে ভাতা পেলে তিনি তার অসুস্থ স্ত্রী ছকিরন নেছাকে নিয়ে বাকি জীবন সুখে কাটাবেন বলে আশা করছেন ভিখারি ওমের আলী।

জীবননগর উপজেলার পুরন্দপুর গ্রামের মৃত মেছের আলী মণ্ডলের ছেলে ওমের আলী জানান, মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্ব থেকে তিনি মাধবপুর-বালিহুদা ঘাটে নৌকা চালাতেন। ওমের মাঝির সংসার চলতো নৌকায় মানুষ পারাপার করে। ১ ছেলে ও ৫ মেয়ের জনক ওমের আলী জানান, এর মধ্যে ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রতিদিন বহু মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা পয়সায় নদী পার করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে পার করতে সহযোগিতায় করায় এলাকার রাজাকার ও পাক সেনাদের রোষানলে পড়েন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ ঘাটের ওপর ব্রিজ নির্মিত হলে তিনি এ পেশা ছেড়ে দুধ বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। একসময় বয়সের ভারে নুইয়ে পড়লে আশ্রয় নেন ছেলের নিকট। কিন্তু ছেলে তাদের ঠিকমতো খেতেপরতে না দিতে তিনি তার জামাতা উপজেলার কাটাপোল গ্রামের আব্দুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই তিনি ও বৃদ্ধা স্ত্রী ছকিরণ নেছা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দিনমজুর জামাতা এক মুঠো ভাত দিলেও, দিতে পারেননা চিকিৎসাসহ পোশাক। ওমের আলী আক্ষেপ করে বলেন, কতো মানুষ মুক্তিযুদ্ধ না করেও সার্টিফিকেট নিয়ে আজ মুক্তিযোদ্ধা বনে সরকারের সকল প্রকার সুবিধা ভোগ করছেন। অথচ তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হলেও তার নাম ওঠেনি মুক্তিযুদ্ধের তালিকায়; পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা।