মুজিবনগর বাংলাদেশের স্বাধীনতার মুর্তিমান ইতিহাস
স্টাফ রিপোর্টার: মার্কিন রাষ্ট্রদুত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে আবিষ্কার করার জন্য যে মিশন নিয়েছি এটা তার একটি অংশ। আমি শুধু ঢাকায় বসে থাকলে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানবো না। আমি পুরো বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। শুধুমাত্র ঢাকায় নয়। এজন্য চুয়াডাঙ্গায় এসেছি। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় এ মন্তব্য করেন। মেহেরপুরের মুজিবনগর পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, মুজিবনগর কমপ্লেক্স বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মুক্তিমান ইতিহাস। তিনি মুজিবনগরে বাউল শিল্পীদের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যান। তিনি বাউল সঙ্গীতকে অর্থবহ সঙ্গীত বলে অবলীলায় স্বীকার করেন।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, বিজিবির উপপরিচালক মেজর আনোয়ারুল জাহিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিক সাঈদ মাহবুব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আঞ্জুমান আরা, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সফরসঙ্গীরা।
মতবিনিময়সভা শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদেরকে বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি কতো সমৃদ্ধ আমি জানতাম না। আমি শুনেছি ভুট্টা উৎপাদন এখানে ভালো হচ্ছে। ভারতের সাথে ট্রেন যোগাযোগের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে অতিরিক্ত ধান,ভুট্টা ও শাক সবজি উৎপাদিত হয়ে থাকে। এগুলো ভারত অথবা ঢাকায় বিক্রি হতে পারে। সে জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চুয়াডাঙ্গায় আসতে পেরে আমি খুব খুশি হয়েছে। এখানে সবাই আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন, আমি আবারও ফিরে আসতে চাই।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন,বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার গৌরবগাথা মুর্তিমান ইতিহাস মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স। একাত্তরে যে স্বাধীনতা সংগ্রাম তা ঐতিহাসিক মুজিবনগরের বিভিন্ন স্থাপনার মধ্যদিয়ে ভালোভাবে বুঝতে পারা যায়। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দেখার মতো একটি চমৎকার স্থান উল্লেখ করে এখানে আসতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করেন তিনি। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স ঘুরে দেখার সময় একথাগুলো বলেন।
পরিদর্শনের আগে বাউল শিল্পীদের সাথে এক অন্য রকম সময় পার করেন তিনি। মেহেরপুরের বাউল শিল্পীদের পরিবেশনায় আধ্যাত্মিক গানে মুগ্ধ হলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা। আম্রকাননে অন্যরকম কিছুটা সময় কাটালেন তিনি।
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে স্থলপথে তিনি মেহেরপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছুলে পুলিশের একটি দলগার্ড অব অনার প্রদান করে। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন, পুলিশ সুপার একেএম নাহিদুল ইসলাম ও গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ ড্যান ডব্লিউ মজিনাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুরের সাবেক এমপি প্রফেসার আব্দুল মান্নান, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. মিয়াজান আলী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুন কুমার মণ্ডল ও বাগোয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেনসহ সরকারি কর্মকর্তবৃন্দ।
উল্লেখ্য, এর আগে গত সোমবার ও মঙ্গলবার মার্কিন রাস্ট্র দূত ঝিনাইদহ পরিদর্শন করেন।