স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীরসোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী সাংবাদিক। গণধর্ষণেরশিকার ওই সাংবাদিক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের স্টাফ রিপোর্টার বলে জানাগেছে। গতসোমবার রাত ১১টার দিকে উদ্যানের তিন নেতার মাজারের পেছনে প্রেমিক ও তার সাত বন্ধু মিলে ওই নারী সাংবাদিককে গণধর্ষণ করে।বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীকে তার প্রেমিক সেখানে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।ঘটনায়প্রতারক প্রেমিক নাঈমসহ অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলাকরেছেন ধর্ষণের শিকার ওই নারী সাংবাদিক। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায়কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসিরাজুল ইসলাম।
মামলায় আসামিরা হলেন, নাঈম (প্রেমিক), শাহীন, রুবেল, ইমরান, হাবিব। ধর্ষণকারীদের মধ্যে কয়েকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরশিক্ষার্থী বলে ধারণা করা হচ্ছে।এছাড়া বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে যখন ক্যাম্পাস পরিদর্শনকরছিলাম তখন তিন নেতার মাজারের পাশে এক তরুণীকে কয়েকজন ছেলে জেরা করছিলো।তিনিবলেন, এ সময় ওই তরুণী রিকশায় ছিলো। পরে যখন আমাদের গাড়িটি রিকশার কাছে এসেদাঁড়ায় তখন ছেলেগুলো আমাকে দেখে উদ্যানের ভেতরে পালিয়ে যায়। আমরা অনেকক্ষণঅপেক্ষা করার পরেও ছেলেগুলোকে আর পাওয়া যায়নি।তিনি আরো বলেন, ‘এ থেকে বোঝা যায় ছেলেগুলো আমাকে চেনে এবং তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী’।এদিকে শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তা হাবিল জানান, ‘ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়িত থেকে থাকতে পারে’।
সূত্রজানায়, শরিয়তপুরের ওই তরুণী রাজধানীর হাজারীবাগে থাকতো। গত ১০ দিন আগে তারসাথে নাঈম (২৭) নামে এক তরুণের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।সম্পর্কের পর থেকে গত কয়েকদিন ধরেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্লাস টাওয়ারেরসামনে তারা দেখা করতো।অন্যান্য দিনের মত গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে৬টায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই তরুণীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডেকে আনে নাঈম।আড্ডা গল্পের নামে রাত ১১টা পর্যন্ত কালক্ষেপণ করে সে। পরে শাহীন, রুবেল, ইমরান, হাবিব নামে কয়েকন বন্ধু ছাড়াও অজ্ঞাত আরো কয়েকজন যুবক নাঈমের সাথেযোগ দেয়। নাঈম তাদেরকে তার বন্ধু ও বিবাহের সাক্ষী বলে পরিচয় করিয়ে দেয়।কিন্তুকিছুক্ষণ পরেই ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় তিননেতার মাজারের পিছনের আনসার ক্যাম্পের পাশে ওই তরুণীকে ছুরির মুখে জিম্মিকরে গণধর্ষণ করে নাঈম ও তার বন্ধুরা।শাহবাগ থানার ডিউটি অফিসারজানান, ধর্ষণের পর রাত সোয়া ১২টার দিকে ওই তরুণী রিকশাযোগে বাসার উদ্দেশ্যেরওনা হয়ে নীলক্ষেত মোড়ে পৌঁছুলে বিষয়টি দায়িত্বরত পুলিশের নজর কাড়ে। পরেতারা রিকশা থামিয়ে ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসে।দায়িত্বরতপুলিশ তাকে উদ্ধার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে। উদ্ধারের পর তরুণীকে সাথেনিয়ে রাতেই ৪ প্লাটুন পুলিশ সন্দেহভাজন এলাকায় তল্লাশি চালায়। ঘণ্টাব্যাপিচালানো ওই তল্লাশি শেষেও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। গতকালমঙ্গলবারসকালে ধর্ষিতা তরুণী বাদী হয়ে নারী ও শিশু আইনে নাঈমকে প্রধান আসামি করেঅজ্ঞাতনামা আরো চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারনম্বর-১৭।শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল পরীক্ষার জন্য তরুণীকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ীঅপরাধীদের সনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী বলেন, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। তারা প্রকৃতই ঢাবিরশিক্ষার্থী কিনা তা যাচাই করা হবে।