স্টাফ রিপোর্টার: চিকিত্সক ও শিক্ষক ছাড়া অন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে নিজ জেলায়নিয়োগ-বদলি করা যাবে না। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহীঅফিসারের (ইউএনও) যৌথ স্বাক্ষরে পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদেয়া হবে কি-না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা।
গতকাল রোববারআন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেরসভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞাসভাপতিত্ব করেন। সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাএতে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ৪৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যেশুধু প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্য কোনো ক্যাডার কর্মকর্তার ক্ষেত্রে নিজজেলায় নিয়োগ-বদলির ওপর বিধিনিষেধ তেমন নেই। বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পরসিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে শিক্ষক ও চিকিত্সক ছাড়া অন্য কোনো সরকারিকর্মকর্তাকে নিজ জেলায় নিয়োগ বা বদলি করে পদায়ন করা যাবে না।
অন্যদিকেস্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন বলেন, উপজেলাপরিষদে হস্তান্তরিত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উপজেলা পরিষদেরমাধ্যমেই দেয়া হবে কী না সেটি মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে।তবে উপজেলা পরিষদের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা গতকালের সভায়অনুমোদন দেয়া হয়েছে।২০০৯ সাল থেকেই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানঅ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ১৭টি মন্ত্রণালয় ওবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে দেয়ারদাবি জানানো হচ্ছিলো। ওই দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল অর্থবিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের সাব-কমিটি গঠন করে।প্রায় দুবছর পর্যালোচনার পর সাব-কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেপাঁচ দফা সুপারিশ করে। পাশাপাশি ছয়টি পর্যবেক্ষণও দেয় তারা।
বিদ্যমানউপজেলা আইনের ৩৫ ধারার (২) (গ) উপধারা অনুযায়ী হস্তান্তরিত বিভাগেরকর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি এবং অন্যান্য ব্যয় বাবদ প্রদত্ত অর্থউপজেলা পরিষদের তহবিলে জমা হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা করা হয় না।সাব-কমিটির সুপারিশে বলা হয়, চেয়ারম্যান এবং ইউএনওর যৌথ স্বাক্ষরে পরিষদেরএকাউন্ট পরিচালিত হওয়া সঙ্গত।
সংবিধানের ১১, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদেরউদ্ধৃতি দিয়ে কমিটির পর্যবেক্ষণে ১৯৮৫ সালের মতোই উপজেলা পরিষদের মাধ্যমেবেতন-ভাতা পরিশোধের সুপারিশ করে বলা হয়, উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৫ ধারার (২) (গ) উপধারা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত প্রতিষ্ঠান বাকর্মপরিচালনাকারী জনবলের বেতন-ভাতাদি এবং অন্যান্য ব্যয় বাবদ সরকার প্রদত্তঅর্থ আগের মতোই উপজেলা পরিষদের তহবিলে ন্যস্ত করা যেতে পারে।
ন্যূনতমপাঁচ সদস্যের জনবল কাঠামো অনুমোদনের সুপারিশ করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হিসাবরক্ষণ অফিসের কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন ও পরিচালনার লক্ষ্যেপ্রতিটি উপজেলা পরিষদে একজন ফাইন্যান্স অফিসার, একজন সহকারী হিসাবরক্ষণকর্মকর্তা, দুজন অডিটর, জুনিয়র অডিটর, অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটারমুদ্রাক্ষরিক এবং একজন এমএলএসএস নিয়োগ করা যেতে পারে। লোকবল নিয়োগের আগপর্যন্ত সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ফাইন্যান্স অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বদেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে উপজেলা পদ্ধতিপ্রবর্তনের সময় পরিষদের মাধ্যমেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেয়াহতো। ১৯৯১ সালের ২৪ নভেম্বর উপজেলা পদ্ধতি বাতিল করা হলে পরিষদেরপ্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক যাবতীয় কাজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর ন্যস্তকরা হয়।