সৌদিতে মার্স ভাইরাস আতঙ্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: সৌদিআরবের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়া মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রম)করোনারি ভাইরাসে চরম আতঙ্কে কাটছে সৌদি আরব প্রবাসী বাংলাদেশিদের দিন।মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক হুমায়ন কবির এবং ৪০ বছরবয়সী এক বাংলাদেশি নারীর মৃত্যুর পর থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্কআরো বেশি ছড়িয়ে পড়েছে।

সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ অধ্যুষিতএলাকায় অবস্থানরত বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, আগের তুলনায়বাংলাদেশি রোগীদের ভিড় অনেক বেশি।রিয়াদের মুরসালাত ক্লিনিকেরপ্রবাসী বাংলাদেশি ডা. রাইসুল মাসুদ শীর্ষ নিউজকে জানিয়েছেন, গায়ে জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথা ব্যথা হলেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছুটে আসছেন ক্লিনিকে।বার বার জানতে চাইছেন, মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা।সৌদি আরবের স্থানীয় নাগরকিদের মধ্যে মার্স ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

সৌদিপ্রবাসী বাংলাদেশি কাপড় ব্যবসায়ী নোয়াখালীর আব্দুল করিম জানিয়েছেন, মার্সভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নিতান্ত জরুরি কাজ ছাড়া সৌদি নাগরিকরা ঘরথেকে বের হচ্ছেন না। তাই আগের চেয়ে বিক্রির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এমনঅবস্থা চলতে থাকলে মোটা অংকের লোকসানের শিকার হতে হবে।

সবচেয়ে বেশিক্ষতির শিকার হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশি ট্যাক্সি চালকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টারাস্তায় ঘুরেও আরোহী না পেয়ে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরতে হচ্ছে তাদেরকে।কুমিল্লারপ্রবাসী বাংলাদেশি নাজমুল আক্ষেপ করে বলেন, ‘প্রতিদিন কোম্পানিকে ১৪০রিয়াল জমা দিতে হয়। আগে যেখানে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রিয়াল আয় করা যেত সেখানেএখন কোম্পানির প্রতিদিনকার জমা ১৪০ রিয়াল উঠাতেই কষ্ট হচ্ছে। কারণ, যাত্রীদের ভয় যদি ট্যাক্সি চালক মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

মার্স ভাইরাসের ভয়াবহতা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অনেক প্রবাসী দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।এমনিএকজন লক্ষ্মীপুরের ৪২ বছর বয়সী মোমেন সর্দার জানান, ‘বেঁচে থাকলেটাকা-পয়সা অনেক হবে। যদি দেখি অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে তাহলে দেশে চলে যাব।’প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেদের আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভের সুরে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে হতাশাও ব্যক্ত করেছেন।

চট্টগ্রামেরমারুফ আক্ষেপ করে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার দেশি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতেএই মার্স ভাইরাস নিয়ে  কোনো প্রচারণা চালাচ্ছে না। এতে করে স্বল্প শিক্ষিতপ্রবাসী বাংলাদেশিরা যাদের নিউজের একমাত্র উৎস স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলতারা মার্স ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়গুলো জানছে না।

পাশাপাশিসরকারিভাবে যদি প্রচারণা চালানো হতো তাহলে দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদেরপরিবার-পরিজনদের ভাইরাস নিয়ে নানাজনের কাছে নানা সংবাদে বিভ্রান্ত হতে হতনা।