স্টাফ রিপোর্টার:র্যাবও পুলিশের ৬ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন প্যানেল মেয়র নজরুলইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম।গতকালশুক্রবার তার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদেরসাথে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেন। এ সময় তিনি নূর হোসেনকে জীবিত উদ্ধারের দাবিজানান। একই সাথেনূর হোসেনের ঠিকাদারি সব কাজ বাতিল এবং বিল স্থগিতেরজন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনিপ্রধানমন্ত্রীর সাথে নজরুলের পরিবারের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্যসংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেন। অপরদিকে সাতখুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের মাদক সাম্রাজ্যে অবশেষে অভিযানচালিয়েছে পুলিশ। সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইল মোড় ট্রাকস্ট্যান্ডে হানা দিয়ে বিপুলপরিমাণ মাদকদ্রব্য ও ৫টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে বাহিনীটি। তবে এ সময়পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। নূর হোসেনের এ স্পটটি মাদক ব্যবসায়ীদেরকাছে মাদকের পাইকারি আড়ত হিসেবে পরিচিতি ছিলো। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টাথেকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. জাকারিয়ারনেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় এএসপি জীবন কান্তি সরকারসহবিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.জাকারিয়া সাংবাদিকদের জানান, ট্রাকস্ট্যান্ডে নূর হোসেনের মাদক সাম্রাজ্যেবিপুল পরিমাণ মাদক মজুদ রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ২হাজার ৯শ’ বোতল ফেনসিডিল, বিদেশী মদের ৯টি বোতল, বিপুলসংখ্যক ইয়াবাট্যাবলেট, ৩৭ কেস হ্যানিকেন বিয়ার ও দুটি বড় ছোরা (চাকু) এবং ৩টি রাম দাউদ্ধার করা হয়।
এর আগে ৩ মে নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সেখানথেকে রক্তমাখা একটি কালো রঙের হাইয়েস (ঢাকা মেট্রো-চ ১৫- ০৫১০) গাড়ি জব্দকরে পুলিশ। ওই সময় মোট ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে নূর হোসেনেরদেহরক্ষী, বাড়ির দারোয়ান ও কাজের লোক রয়েছে। গডফাদার নূর হোসেন, তার ছোটভাই জজ মিয়া, ভাতিজা কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলসহ তার সহযোগীদের কাউকেই এখনওগ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঢাকামহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায়অভিযুক্তদের সাথে আমার পরিবারের কোনো সদস্যের কোনো যোগাযোগ বা ব্যবসায়িকলেনদেন ছিলো না। গতকালশুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা বলেন।মায়া বলেন, এ ঘটনায় সঙ্গে আমার পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেবিভিন্ন ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। যা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে এবংআমার পরিবারের সম্মানহানি করেছে। মন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় আইনশৃংখলা বাহিনীরবিভিন্ন সংস্থার তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। এ তদন্ত যেন কোনোভাবেইপ্রভাবিত না হয়, সেজন্য আমি কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত আছি।
নারায়ণগঞ্জেরসাত অপহরণ ও খুনের মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই। একের পর এক তদন্ত কর্মকর্তাবদল ও কমিটির পর কমিটি গঠন করেও কাজের কাজ হচ্ছে না। সিদ্ধান্তহীনতা ওসমন্বয়হীনতার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে এ হত্যাকাণ্ডের পর গঠিত বিভিন্ন তদন্তকমিটির কার্যক্রম। তবে যে কোনো মুহূর্তে মামলার তদন্তে গতি আসবে বলে দাবিকরেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সূত্র বলেছে, যে কোনো মুহূর্তেজিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপারসহচাকরিচ্যুত র্যাবের তিন কর্মকর্তা। এদিকে গণবদলির পর নারায়ণগঞ্জে পুলিশপ্রশাসনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বদলি হলেও মাত্র দুজন ছাড়া শুক্রবার পর্যন্তনতুন কেউ নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি। পুরনোরাও কাজ করছেন গা-ছাড়াভাবে। এরফলে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনারপ্রধান সন্দেহভাজন নূর হোসেন যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে গেছেন। কোনো খোঁজ মিলছেনা তার। এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। গতবৃহস্পতিবার নূর হোসেনকেগ্রেফতারের সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ বিষয়টিনিশ্চিত করতে পারেননি। এ নিয়ে নতুন কোনো তথ্যও আর পাওয়া যাচ্ছে না।