ঝিনাইদহে সৌদি আরব থেকে পাঠানো ৮০ কার্টুন খয়রাতি দুম্বার মাংস লুট : বঞ্চিত হলো অধিকাংশ এতিম ও দুস্থরা

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে সৌদি আরব থেকে এতিম ও দুস্থদের জন্য পাঠানো খয়রাতি দুম্বার মাংস লুট করে নিয়ে গেছে দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের লোকজন। গতকালবৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিতরণের সময় ভারপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তানির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল হোসেন এবং পুলিশ সদস্যদের সামনে অন্তত ৮০ কার্টুন মাংস লুটের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৬টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৬ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ১১ জন ইউপি সচিব এবং বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদরাসার প্রতিনিধিরা তাদের জন্য ধার্যকৃত খয়রাতি দুম্বার মাংস নেবার জন্য উপস্থিত হন। তবে মাত্র ৩ কার্টুন মাংস নেয়ার জন্য সুরাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দ্দার কেবি অন্তত ২০ জন লোক নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হন। এছাড়া পোড়াহাটি ইউনিয়নের মাংস নেয়ার জন্য সেখানে ১০-১৫ জন ব্যক্তিকে দেখা যায়। এ অবস্থায় সকাল সাড়ে ৬টায় জেলার ৬ উপজেলার খয়রাতি দুম্বার মাংস বহনকারী ট্রাক এসে পৌঁছুলে সেখান থেকে সদর উপজেলার জন্য ১১৪ কার্টুন মাংস নামিয়ে জেলা প্রশাসকের দফতরের প্রধান ফটকের সামনে রাখা হয়। এরপর তালিকা আনুযায়ী সাধূহাটি ও মধুহাটি ইউনিয়নের মাংস প্রদানের পর পরই সুরাট ও পোড়াহাটি ইউনিয়নের লোকজন মুহূর্তের মধ্যে সেখানে দায়িত্বরত সদর প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের কর্মচারীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে ৮০ কার্টুন মাংস লুট করে আলমসাধুযোগে নিয়ে যায়। যে কারণে অধিকাংশ এতিমখানা, মাদরাসা ও ইউনিয়ন পরিষদ তাদের জন্য বরাদ্দকৃত মাংস থেকে বঞ্চিত হয় ।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ভারপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল হোসেন, পুলিশের উপপরিদর্শক এমদাদসহ পুলিশ সদস্যরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার দায়িত্ব ৬ উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত খয়রাতি দুম্বার মাংস সঠিকভাবে উপজেলা কর্তৃপক্ষের নিকট বুঝে দেয়া। তারপর মাংস বিতরণ ও রক্ষা করার দায়িত্ব স্ব-স্ব উপজেলা প্রশাসনের।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন খয়রাতি দুম্বার মাংস লুট হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যারা এ লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ক্ষমার অযোগ্য। এ ঘটনার পর যে সব এতিমখানা, মাদরাসা ও ইউপি পরিষদ মাংস থেকে বঞ্চিত হয়েছিলো তিনি ওই সকল প্রতিষ্ঠানকে তার দফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত মাংস থেকে বঞ্চিতদের ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শ করে তিনি লূটের ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।