ডাকবাংলা বাজারের কৃষক সিরাজুলের উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধান তাক লাগিয়ে দিয়েছে

গিয়াস উদ্দীনসেতু: ঝিনাইদহের সদর উপজেলার ১নং সাধুহাটী ইউনিয়নের ডাকবাংলা বাজারের কৃষক সিরাজুলের উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধান এলাকার কৃষকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। প্রতিদিন এলাকার কৃষকরা নতুন জাতের এ ধান দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ধানক্ষেতে। ধান কাটার আগেই বীজ নিতে আগ্রহী কৃষকরা অগ্রীম বাইনা দিচ্ছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সরেজমিনে মাগুরাপাড়া ডিপটিউবওয়ের মাঠে ধান দেখতে গিয়ে কিছুটা অবাক হতে হয়েছে। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন ব্যাপার।

কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান,দু বছর আগে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমন ধানের জমিতে এক গোছা উচুধান গাছ দেখতে পান। সেই ধান গাছটি কেটে বাড়ি নিয়ে আসেন এবং ধানগুলো সংগ্রহ করেন। এভাবে চাষ করতে থাকেন। কারো কাছে তিনি বলেনি কী জাতের ধান,এমনকি কাউকে এ জাতের বীজ দেননি।তিনি নিজেই এবার এ ধান এক একর লাগিয়ে মাঠের কৃষকের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এখন প্রতিদিন শ শ কৃষক তার ধান দেখতে যান। কৃষক সিরাজুল ধানের নামকরণ করেছে সূর্যমুখি। ধানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি জানালেন। এ ধান বছরে দু মরসুমে চাষ করা সম্ভব,গাছ উচু ও শক্তিশালী,সার কম লাগে, এ ধান রোগবালাই ও কীটপতঙ্গ মুক্ত,ধান মোটা,গোছাই অনেক হয়,একটা চারা লাগালে প্রায় ১২/১৬টি চারা গজায়,৩৩শতাংশ জমিতে ৩০ থেকে ৩২মণ পর্যন্ত হওয়া সম্ভব।

কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ৫৬ শতক জমিতে এ ধানচাষ করে ব্যাপক সাফল্য লাভ করবেন। গত আমন মরসুমে ৩৩ শতক জমিতে ২৭ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে।কিন্তু ইরি মরসুমে ফলনটা বেশি হবে বলে তিনি মনে করছেন। এ বিষয়ে কথা হয় উপসহকারী কৃষি অফিসার অজয় সরকারের সাথে।তিনি বলেন, কৃষকদের মুখে ধানের কথা শুনে আমি সরেজমিনে দেখেছি।এমন ধান আমার চোখে এই প্রথম। তবে এ জাতের ধান যদি কৃষকরা চাষ করে তবে কৃষিক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে। কথা হয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. খান মনিরুজ্জামানের সাথে। এ ধান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এদেশের কৃষকরাই বড় বৈজ্ঞানিক, অন্য কৃষকরা ইচ্ছা করলে কৃষক সিরাজুল ইসলামের অনুসন্ধানী চোখ রেখে এমন বীজ সংগ্রহ করতে পারেন।