গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ভরাট গ্রামে বোমাঘাতে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। গতরাত দেড়টার দিকে ওই গ্রামের টিপু সুলতানের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। তবে বোমা হামলা নাকি বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণ তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
আহতরা হচ্ছেন–ভরাট গ্রামের দারাজ আলীর ছেলে টিপু সুলতান (৩২), আব্দুস সাত্তারের ছেলে শমসের আলী (৩০) ও মিনারুল ইসলাম (৩০)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই তাদেরকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপতালে রেফার করেছে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ ভরাটের শেষের দিকে ফাঁকা জায়গায় টিপু সুলতানের বাড়িতে প্রতিদিনই তাসের আসর বসতো। টিপুসহ তার কয়েকজন বন্ধু গভীর রাত অবধি তাস খেলায় মত্ত থাকতেন। গতরাত দেড়টার দিকে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণে এলাকার মানুষের ঘুম ভাঙে। প্রতিবেশীরা টিপুর বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান টিপু, শমসের ও মিনারুল রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত তিনজনকেই গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপতালে প্রেরণ করা হয়।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, টিপু সুলতানের ডান চোখ, দু হাত-পাসহ মুখে বোমার স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে। একই অবস্থা শমসের আলীর। তার মুখমন্ডলে রক্তাত্ব ক্ষত হয়েছে। মিনারুল ইসলামের দু হাত-পা ও বুকে বোমার আঘাত রয়েছে।
স্থানীয়সূত্রে আরো জানা গেছে, আহত তিন জনের বিরুদ্ধে বোমা তৈরি কিংবা বোমা হামলার মতো অপরাধের কোনো অভিযোগ নেই। তাই বোমা হামলা না বোমা তৈরিকালে বিস্ফোরণ তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তাস খেলার বিরোধ কিংবা বোমা তৈরিকালে বিস্ফোরণ এমন বিষয় নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাংনী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ফারুকুল ইসলাম। তিনি দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি চট ও তাস পাওয়া গেছে। টিপুর পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে দাবি করেছে তাস খেলার সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে গেছে। তবে ঘটনাস্থল, আহতদের শরীরের আঘাতের চিহ্নসহ পারিপার্শ্বিকতা বিশ্লেষণ করে বোমা তৈরিকালে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করছে পুলিশ। তিনি আরো জানান, আহত তিনজনেরই মুখ, হাত-পা ও শরীরের সামনের অংশে স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে। এতে বোমা তৈরি করার সময় বিস্ফোরণ হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তিনি। তবে ঘটনার আরো তদন্ত করে রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন পুলিশের একই কর্মকর্তা।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের সাথে কথা বলেন গাংনী থানার এএসই সুফল। তিনি জানান, শমসের আলী তাকে জানিয়েছে তাস খেলার সময় এক ব্যক্তি বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে গেছে। যেহেতু স্বাভাবিক নিয়মে তাস খেলতে চারজন খেলোয়াড় প্রয়েজন হয় তাই তিনজন আহত হলেও আরেক জনের হসিদ নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।