পিচ্ছিল বাঁশে বালিশ যুদ্ধসহ ১৮টি ইভেন্টের একটিতে ডিআইজিও নিলেন অংশ

 

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের বার্ষিক সমাবেশসহক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সমাবেশ জাগজমকপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। পানির ওপর পিচ্চল বাঁশে বসে বালিস যুদ্ধসহ ১৮টি ইভেন্টে দিন ব্যাপি প্রতিযোগীরা প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারের লড়াইয়ে মেতে থাকেন। আয়োজনের উদ্বোধন করেন খুলনা রেঞ্জেরে এসএম মনির উর জামান বিপিএম। প্রতিযোগিতা শেষে তিনিই প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

গতকাল শনিবার দিনব্যাপি আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিআইজি প্রত্নী মিসেস নুছরতা জামান, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন, চুয়াডাঙ্গাস্থ ৬ বিজিবির পরিচারক লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামান, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান। স্বাগত ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান। তিনিই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ, মেহেরপুর পুলিশ সুপার একেএম নাহিদুল ইসলাম, মাগুরা পুলিশ সুপার জাহিদুল কবির, নড়াইল পুলিশ সুপার মনির হোসেন, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল শনিবার সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন্স চত্বর ছিলো মনোরম সাজে সু-সজ্জিত ও পরিপাটি করা। জেলা পুলিশে কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য, পুলিশ সদস্যের সন্তানদের ও পরিবার পরিজনদের নিয়ে চলে দিনব্যাপি ১৮টি ইভেন্টের প্রতিযোগিতা। এসব প্রতিযোগিতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো পানির ওপর পিচ্ছিল বাঁশে বসে বালিশ লড়াই, অ্যালারাম প্যারেড, এসআইদের স্মৃতি বুদ্ধিমত্তা, মহিলা পুলিশ ও পুলিশ সদস্যদের স্ত্রীদের মিউজিক বালিশ বলদ, যেমন খুশি তেমন সাজ প্রভৃতি। এর মধ্যে অ্যালারাম প্যারেড প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেয়ে মাথাভাঙ্গা গ্রুপ প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রতিযোগিতার অন্য দুটি দল ছিলো ভৈরব ও চিত্রা। এছাড়া এএসআই ও এসআইদেরস্মৃতি বুদ্ধিমত্তা প্রতিযোগিতায় এসআই কামরুল প্রথম, এসআই খালিদ দ্বিতীয় ও সার্জেন্ট সুমন তৃতীয় স্থান অধিকার করে। সন্ধ্যার আগে ১৮ টি ইভেন্টে বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এর পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জেলা পুলিশের আয়োজনে শুরু হয় বার্ষিক ভোজ। এ ভোজ অনুষ্ঠানে জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আইনজীবিসহ পেশাজীবী কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হয় সঙ্গীত অনুষ্ঠান। গতকাল শনিবার সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান ও সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দীন বার্ষিক পুলিশ সবাবেশ অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করা জন্য ব্যতিব্যস্ত ছিলেন। বিকেল ৩টা থেকে আসতে থাকা আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান জানান স্বাগত। কর্মব্যস্ত জাঁক-জমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার যাদেরকে অংশগ্রহণ করাতে পেরেছেন তারা হলেন ডিআইজি মনিরুজ্জামান পিপিএম, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন, ৬ বর্ডার গার্ডের পরিচালক লে. কর্ণেল এসএম মনিরুজ্জামান, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দীন, মেহেরপুরের পুলিশ সুপার, মাগুরার পুলিশ সুপার, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিপি বাংলাদেশের কর্মকর্তা এনামুল কবীরসহ পদস্থ কর্মকর্তারা। বেলুন ফোটানো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি প্রথম স্থান অধিকার করেন। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ৬ বিজিবির অধিনায়ক তথা পরিচালক এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার।

জেলা পুলিশের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সমাবেশে আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের সাথে সম্মানজনক আচরণের অভাব পরিলক্ষিত হওয়ায় সাংস্কৃতিক ও নৈশভোজের পূর্বে ডিআইজি স্বয়ং উপস্থিত সাংবাদিকদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সাংবাদিকদের সাথে নিয়েই নৈশভোজে অংশ নেন। এ সময় তিনি বলেন, আমিও এক সময় সাংবাদিকতা করেছি। কর্মজীবনের শুরুটাই সাংবাদিকতা দিয়ে। সাংবাদিক এবং পুলিশের মধ্যে পার্থক্য নেই। সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য সাংবাদিক ও পুলিশকে টাকার এপিঠ ওপিঠ বললেও ভুল বলা হয় না। অথচ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের যথাযথ সম্মানের অভাব আমাকে আহত করেছে। তিনি সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারকে এ দিকে বিশেষ দৃষ্টিপাতের নির্দেশও দেন। ফলে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত তা প্রসমিত হয়।

Leave a comment