বন্যহাতির তাণ্ডব

 

স্টাফ রিপোর্টার: টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা একটি বুনোহাতির সাথে হাজার হাজার মানুষেরশ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর অবশেষে হাতিটিকে গুলি করে কুপোকাত করেছে পুলিশ।তবে এরই মধ্যে হাতির আক্রমণে দুজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দুজন।গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে জেলার গারোপাহাড় সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরউপজেলার নলুয়াপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরের গারোপাহাড় থেকে একদল বুনোহাতি নেমেআসে। ভোরে হাতির দলটি পাহাড়ে ফিরে গেলেও একটি হাতি দলছুট হয়ে যায়। দলছুটহয়ে যাওয়া হাতিটি ভোর পাঁচটার দিকে সোমেশ্বরী নদীর চর দিয়ে এসে প্রথমেদুর্গাপুর পৌর এলাকার সাধুপাড়া এলাকার হরি দে’র বাড়িতে আক্রমণ চালায়। এতেহরিদে’র স্ত্রী গীতা রানী দে (৫৫) আহত হলে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহমেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর পর হাতিটি মানুষের ধাওয়া খেয়েআত্রাখালী সেতু পাড় হয়ে নলুয়াপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেতে অবস্থান নেয়। খবরপেয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবিসহ কয়েক হাজার লোক ঘেরাও করেফেললে হাতিটি দিগি¦দিক ছুটতে থাকে। এ সময় চকলেঙ্গুরা গ্রামের আব্দুর রহিম (৫৫), তাহের উদ্দিন (৭০) ও পৌর শহরের মিঠাপুকুর পাড়ের শিবু পাণ্ডে (৪০) হাতিরআক্রমণে আহত হলে তাদের দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাহের উদ্দিন ও শিবু পাণ্ডে মারা যান। একপর্যায়েপুলিশ বুনো হাতিটিকে গুলি করে হত্যা করলে জনগণের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে।

উল্লেখ্য, ওই সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতের পাহাড় অরণ্য থেকে প্রায় সময়ই বুনোহাতি নেমে আসে। এসব হাতি লোকালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে।

শেরপুর সীমান্তে ধানক্ষেতে আক্রমণ: শেরপুর নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নেরসীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রামের কৃষকের বোরো ধানের ক্ষেত নষ্ট করেছে বন্যহাতির একটি দল। বৃহস্পতিবার ভোরে নয়াবিল ইউনিয়নের নাকুগাঁও গ্রামে ওইআক্রমণ চালায়।

জানা যায়, বন্য হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কিছুদিন ধরে সীমান্ত এলাকায়বসবাসকারী উপজাতি ও কৃষকরা রাতভর বাড়িঘর ও আবাদি পাকা বোরো ধানের জমিপাহারা দিয়ে আসছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কৃষকদের আবাদি জমিতেবন্য হাতির দল আক্রমণ চালায়। ওই সময় নয়াবিল ইউনিয়নের নাকুগাঁও গ্রামেররোস্তম আলী, শরাফত আলী, নিরঞ্জন দিও, হারুন মিয়াসহ কয়েকজন কৃষকের প্রায়১০/১২ একর অর্ধপাকা বোরো ক্ষেতের ধান খেয়ে সাবাড় করে দেয় বন্য হাতির দল।

নয়াবিল ইউপি চেয়ারম্যান নুর রহমান জানান, ওই ইউনিয়নের জঙ্গলে এখনও ৫০/৬০টিবন্য হাতি অবস্থান করছে। হাতিগুলো রাতের বেলায় লোকালয়ে হানা দেয়। আর দিনেরবেলা জঙ্গলে গিয়ে অবস্থান নেয়। অনেক চেষ্টা করেও হাতিগুলোকে এ এলাকা থেকেসরানো যাচ্ছে না।স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক রুস্তম আলী জানান, নয়াবিল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেরমানুষ হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার চিন্তা ও রাত জেগে পাহারা দিতে গিয়েঅসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাতির আক্রমণ থেকে গ্রামবাসীকে বাঁচাতে প্রশাসনেরসহযোগিতাসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবি করেন তিনি।