লাটাহাম্বারের নিচে পড়ে চালকের করুণ মৃত্যু

আলমডাঙ্গার অনুপনগরে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বালি তুলতে গিয়ে বিপত্তি

 

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে অনিক সাইফুল: আলমডাঙ্গারঅনুপনগরে মাথাভাঙ্গা নদীর শ্মশানঘাট থেকে বালি তুলতে গিয়ে লাটাহাম্বার চালকের মৃত্যু হয়েছে। শ্যালোইঞ্জিনচালিত ট্রাকরূপি দানবের নিচে পড়ে নিহত হয় তিনি। গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত লাটাহাম্বারচালক আলমডাঙ্গার বাড়াদী ইউনিয়নের অনুপনগর নওদাপাড়া গ্রামের মল্লিক বিশ্বাসের ছেলে লাখু (৩৫)। তিনি নিজেই নিজের শ্যালোইঞ্জিনচালিত লাটাহাম্মারচালক। কয়েকজন দিনমজুরি নিয়ে বালি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। স্থানীয়রা বলেছেন, আলমডাঙ্গার মহেশপুরের সান্দামরীর মাঠ নামক স্থানের মাথাভাঙ্গা নদীর ভোগাইলবগাদী গ্রামে শ্মশানঘাট। এখন থেকে দেদারছে বালি তুলে বিক্রি করে আসছিলো লাখু। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, বালিভর্তির একপর্যায়ে লাটাহাম্বারটি গড়িয়ে নদীর দিকে ঝুঁকতে থাকে। এ সময় লেবার সাবদাল, কালু, হুমায়ন ও সাদ্দামসহচালক লাখু গাড়ির সামনে গিয়ে গাড়িটির গতিরোধের চেষ্টা চালান। দিনমজুরেরা নিরাপদে সরতে পারলেও চালক লাখু সরতে না পারায় শেষ পর্যায়ে লাটাহাম্বারের নিচে পড়েন। পিছনের চাকার ডিবান্সেলের সাথে জড়িয়ে পড়ে মুখমণ্ডলের চোখ, মুখ, নাকসহ চ্যাপ্টা হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সাথে থাকা লেবার ও মাঠে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে লাশ বাড়িতে নেন। স্বামীর এ অকাল মৃত্যুতে রাখুর স্ত্রী সোনিয়া দিশেহারা হয়ে পড়েন। একমাত্র মেয়ে নুপুর (৩) কোনো কিছু বুঝতে না পারলেও সে তার আদরের আব্বুকে হারিয়েছে। পিতার আদর বোঝার আগেই নুপুর তার পিতাকে হারালো। রাখুর স্ত্রী ও নিকট আত্মীয়দের আহাজারিতে গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার এসআই জিয়াউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গতকাল দুপুর ২টার দিকে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নামাজে জানাজা শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়।

গ্রামবাসী জানায়, এই একই স্থানে গত ৫ বছর আগে ভোগাইলবাগাদী গ্রামের মাতাহারের ছেলে আইতাল (৫) গোসল করতে গিয়ে পানিতে ঢুবে যায়। সে সময় শ্মশানঘাটে দুটি ছাগল মানত করে ২ দিন পরে মৃত অবস্থায় আইতালকে খুঁজে পাওয়া যায়। সেই থেকে কুসংস্কার চালু আছে। গতকাল লাখুর অকাল মৃত্যুকে পুঁজি করে অনেকেই কুসংস্কার প্রচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে বলেছে, শ্মশানের প্রতাত্তাদের রোষানলে পড়েই ঝরে গেলো লাখু।

Leave a comment