চুয়াডাঙ্গা যশোরে লু হাওয়া : তাপমাত্রার পারদ ৪২ ছুঁইছুঁই : দর্শনায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও যশোরসহ দেশের অধিকাংশ এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপ প্রবাহ। লু হাওয়ায় শরীর ঝলসে যাওয়ার উপক্রম। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের তীব্রতা রাস্তাঘাট জনশূন্য করে তুলছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গতকাল দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত বিদ্যালয় ছুটি দেয়া হয়।

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল যশোরে ৪১ দশমিক ৬ এবং চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। দুপুরে রোদ চলাফেরা দূরাস্ত তাকানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে রাতে দিনের তুলনায় গরমের মাত্রা ছিলো কম। আবহাওয়া অফিস থেকে অবশ্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাবে আবহওয়া পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ বৃষ্টি হতে পারে তা স্পষ্ট করে জানায়নি। শনিবার নাগাদ বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া বিদেরা বাতাস ও বাতাসে বাষ্পসহ বঙ্গোপসাগরের বর্তমান পরস্থিতি পর্যালোচনা করে মন্তব্য করেছে। এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মর্নিং না করাই অভিভাবকদের মধ্যে বেড়েছে ক্ষোভ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করা হলে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা চলছে। এ কারণে মর্নিং করা যাচ্ছে না। গরমের ছুটিও আসন্ন। অবশ্য তার আগে শিশু শিক্ষার্থীদের কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে দায়িত্ব নেবে কে? এ প্রশ্নের জবাব মেলেনি। সচেতন অভিভাবক মহল অবশ্য উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছে।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে,প্রচণ্ডএ তাপ প্রবাহ সহ্য করতে না পেরে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা মাধ্যমিক বালিকাবিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাসমত আলীজানান, সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস চলাকালে ১০ম শ্রেণির ১৩জন ছাত্রী প্রচণ্ড দাপদাহের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় দ্রুত তাদেরকেস্থানীয় ক্লিনিক ও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হয়। এ ঘটনার পরস্কুল ছুটি দেয়া হয়। অসুস্থ শিক্ষার্থীরাহলো- আঁখিতারা, অথৈই, পপি, শারমিন সুলতানা, সান্তনা, জান্নাতুল ফেরদৌস, জুঁই, সৌদিয়া ইসলাম, ছুম্মা আক্তার, আলফা আঁখি, রুমি, ইতি ও কথা।

প্রচণ্ডগরম আর রেকর্ড তাপমাত্রায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের জনজীবনে বিরূপ প্রভাবপড়তে শুরু করেছে। অসহনীয় রোদ সাধারণ মানুষের জন্য রীতিমতো হুমকি হয়েদেখা দিয়েছে। সবার প্রতীক্ষা একটু বৃষ্টির জন্য। অবস্থা এমন দাড়িয়েছেআল্লাহ মেঘ দে….পানি দে…..ছায়া দে….।
আবহাওয়াঅধিদপ্তর এতোদিন বৃষ্টির কোনো সুসংবাদ দিতে পারেনি। আশার কথা হলো গতকাল বুধবার রাতেজানানো হয়েছে, খুব শিগগির স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলবে। এতে তাপামাত্রাসহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে দ্রুত।আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বৃহস্পতিবারসন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ১২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের বেশকিছু স্থানে বৃষ্টি হওয়ারসম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে থাকবে কালবোশেখি ঝড়।রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা,কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে পশ্চিম থেকেউত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে কালবোশেখি ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসময় বাতাসেরগতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। আবার কোথাও কোথাও আরো অধিকবেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাওশিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

ঢাকা অফিস জানিয়েছে,গত ৪ বছরের মধ্যে ঢাকা শহরে সর্বোচ্চ তাপামাত্রারেকর্ড হয়েছে আজ। গতকাল বুধবার ঢাকা শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেআবহাওয়া অধিদপ্তর। এর আগে ২০০৯ সালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা ৩৯ দশমিক ৬ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় এ যাবতকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ১৯৬০ সালের ৩০এপ্রিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে মেঘমালার আভাস নেই বলে শিগগিরই বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনানেই। সব মিলিয়ে বৃষ্টিবিহীন বৈরি পরিস্থিতি চলবে আরো তিন থেকে চারদিন।আবহাওয়াঅধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো যশোরে ৪১দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলোসৈয়দপুর ওশ্রীমঙ্গলে ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

Leave a comment