ক্ষতিকর রাসায়নিক মাখানো প্রচুর পরিমাণের তরমুজ বাজেয়াপ্ত : ১২ ব্যবসায়ীর জরিমানা

চুয়াডাঙ্গার ফলের দোকানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত : ফরমালিন ডিটেক্টরের শরীর শিউরোনো সঙ্কেত

 

রহমান রনজু/মারুফ হোসেন: চুয়াডাঙ্গা বড়বাজারের ফলের দোকানগুলোতে রাখা ফলেই শুধু ফরমালিন নয়, দোকানের আশেপাশের বাতাসেও ফরমালিনের অস্তিত্ব পেয়েছে ডিটেক্টর। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে থাকা ফরমালিন ডিটেক্টরে যে সঙ্কেত দিয়েছে তা গা শিউরে ওঠার মতোই।

ভ্রাম্যামাণ আদালত প্রচুর পরিমাণের ফরমালিন মাখানো তরমজু, আঙ্গুর উদ্ধার করে তা বাজেয়াপ্ত করেছেন। ফলের তিন দোকানি ও তরমুজ বিক্রেতা ৯ জনকে ৫শ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হলেও চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ফলের দোকানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ফরমালিন ডিটেক্টর নিয়ে অভিযানে নামলে ভোক্তা সাধারণের মধ্যে স্বস্তি নামে। রাসায়নিক পদার্থযুক্ত তরমুজ খেয়ে যখন একের পর এক মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। ঝরছে শিশুর প্রাণ। তখন চুয়াডাঙ্গায় তিন জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যাপক প্রশংসিত হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতসূত্র বলেছেন, চুয়াডাঙ্গা বড়বাজারের শহীদ হাসান চত্বরের আশপাশে তরমুজ বিক্রেতাদের যে তরমুজেই ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্র লাগানো হয়েছে তার অধিকাংশেই ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ফলে এক ট্রাকেরও অধিক পরিমাণের তরমুজ উদ্ধার করে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়। তরমুজ বিক্রেতা চুয়াডাঙ্গা মাস্টারপাড়ার মোশারফ হোসেনের ছেলে মিন্টু, শান্তিপাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে রানা, ভি.জে স্কুলপাড়ার আজগার আলীর ছেলে সহিদুল ইসলাম, মাঝেরপাড়ার আজিজুর রহমানের ছেলে মিজান, দৌলাতদিয়াড়ের বিশারত মণ্ডলের ছেলে সালাম, পূজাতলাপাড়ার ভোলা শেখের ছেলে আশরাফ, ভোলা শেখের ছেলে আব্বাস, গাড়াবাড়িয়ার আনিছ উদ্দীনের ছেলে মনিরুল ইসলাম ও পৌর কলেজপাড়ার মোবারক আলীর ছেলে সিরাজকে ৫শ টাকা করে জরিমানা করা হয়। তাদের দোকানে থাকা ফরমালিনযুক্ত প্রচুর পরিমাণের তরমুজ বাজেয়াপ্ত করে চুয়াডাঙ্গা পৌর ভাগাড়ে নিয়ে বিনষ্ট করা হয়। এছাড়া ফল দোকানি চুয়াডাঙ্গা সিঅ্যান্ডবিপাড়ার কালু শেখের ছেলে আলাউদ্দীন, ভি.জে স্কুলপাড়ার ছন্নত আলীর ছেলে জলিল ও শান্তিপাড়ার গোলাম রসুলের ছেলে শুকুর আলীকেও অভিন্ন হারে অর্থদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদের দোকানে রাখা আঙ্গুরে প্রচুর পরিমাণের ফরমালিন পাওয়া গেছে।

আদালতসূত্র আরো বলেছেন, পচনরোধক তথা ফরমালিন দিয়ে দিয়ে ফলগুলোকে এমনভাবে রাখা হয়েছে যা থেকে বাতাসেও ছড়াচ্ছে ফরমালিন। ডিটেক্টরে বাতাসেও ফরমালিনের অস্তিত্ব পেয়ে সঙ্কেত দিয়ে সতর্ক করছে। এ সতর্কতা কি ফরমালিন মাখানো ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল করতে পারবে? স্থানীয় অনেকেই এ প্রশ্ন তুলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল বিকেলে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্বে ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোকলেছুর রহমান, রেজা হাসান, সরকার অসীম কুমার। ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে থাকা ফরমালিন ডিটেক্টর নিয়ে অবশ্য ফলবিক্রেতাদের কয়েকজন প্রশ্নও তুলেছেন।

Leave a comment