এবার লাঠিসোঁটা নিয়ে সদর হাসপাতালে উচ্ছৃঙ্খলদের আক্রমণ

কাজ করতে নিরাপত্তাবোধ করছেন না সেবিকারা : দফায় দফায় হামলা

 

স্টাফ রিপোর্টার: হাসপাতালে কাজ করতে নিরাপত্তাবোধ করছেন না সেবিকারা। একের পর আক্রমণ ও হামলা তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। গত রাতেও এক নার্সের ওপর আক্রমণ করা হয়। রোগীর সাথে থাকা একজনের ফোন পেয়ে একদল যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হাসপাতালে ঢোকে। এ সময় হাসপাতালে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাথে সাথে পুলিশ টের পেয়ে ব্যবস্থা নেয়ার ফলে ওই নার্সের ওপর হামলা করতে পারেনি উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা। তবে আতঙ্কিত হয়ে আছেন তারা। পৌর মেয়রের আশ্বাসের পরেও কোনো কারণ ছাড়াই এ ধরনের আক্রমণ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সেবিকারা।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলাধীন জেহালা ইউনিয়নের গড়চাপড়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের স্ত্রী জরিনা খাতুনের (৪০) সাপে দংশন করেছে ধারণা করে গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখেন। অবস্থা বুঝে এন্টিভেনম দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। সে মোতাবেক ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডের সেবিকা মনোয়ারা রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। রোগীর লোকজন তাকে বারবার তাগিদ দেন এন্টিভেনম দেয়ার জন্য। কিন্তু সেবিকা জানান, অবস্থা বুঝে দিতে হবে। প্রয়োজন না হলে দেয়ার দরকার হবে না। এতে রোগীর লোকজন তার ওপরে ক্ষুব্ধ হন। পরে কোথায় যেন তারা ফোন করে দেয়। রাত ৯টার দিকে ২০/২৫ জন উচ্ছৃঙ্খল যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। তারা ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডের নার্স মনোয়ারাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় আকস্মিক পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ওই ওয়ার্ডের রোগীর সাথে থাকা লোকজন জানায়, উচ্ছৃঙ্খলরা ওয়ার্ডে ঢুকে গালমন্দও করে। এ সময় হাসপাতালে ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

গত ১ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরেক সেবিকা অশ্রজার ওপর হামলা করে রোগীর লোকজন। তাকে ডিউটিরত অবস্থায় মারধর করেলে নিরাপত্তার দাবিতে নার্সরা অঘোষিত ৩ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন। পরদিন অভিযুক্ত বাবলু গ্রেফতার হয়। ওইদিন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে এ ব্যাপারে বৈঠক হয়। বৈঠকে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন নিরাপত্তার আশ্বাস দেন নার্সদের। তারপরেও গতকালের আক্রমণ নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে সেবিকাদের। তারা অভিযোগ করেন, কোনো কিছু বুঝে না বুঝে আমাদের ওপর এভাবে দফায় দফায় আক্রমণ হলে কাজ করবো কীভাবে? আমাদের বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তারা আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু কেন বারবার এই হামলা?

এ ব্যাপারে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুর রহমান জানান, যথাসময়ে পুলিশকে খবর দেয়ার কারণে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। যেকোনো সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও বারডেম হাসপাতালের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য হাসপাতালের কঠোর নিরাপত্তা প্রয়োজন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোয় যেভাবে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকে, সেভাবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পুলিশি প্রহরা দরকার।