দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুন্নাহার জিনিয়া
স্টাফরিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্রীকে শারীরিক শাস্তিসহ উত্তপ্ত রোদে দাঁড় করিয়ে রাখলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুন্নাহার জিনিয়া। ছাত্রী অভিভাবক ও কোমলমতি ছাত্রীরা জানায়,গতকাল সোমবার পৌনে ১টা থেকে ছুটি না হওয়া পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদে শতাধিক ছাত্রীকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তাদের অপরাধ স্কার্ফে বডার না থাকা, শার্টের কলারে বডার না থাকা, ভুলবশত কেউ মোজা না পরে আসা ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্তপ্ত রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
জানা গেছে,ভর্তি পরীক্ষার পর থেকে ৪ মাস অতিবাহিত হলেও এসব শিক্ষার্থীদের কোনোরকম ওয়াড়নিং বা সুযোগ না দিয়ে লঘু অপরাধকে গুরু অপরাধের শাস্তি প্রদান করেন বিদ্যালয়ের দায়িত্বপাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুন্নাহার জিনিয়া। তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণিরএসব ছাত্রীদের শাস্তি স্বরূপ বিদ্যালয়ের খোলা চত্বরে উত্তপ্ত রোদে দাঁড় করানো হলে নবম-দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী আজকের মতো সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করলে জিনিয়া ম্যাডাম তেড়ে এসে কেন শাস্তির প্রতিবাদ করছো বলে তাদেরকে চড়থাপ্পড় মারেন। আর বলতে থাকেন এখন থেকে এরকমই হবে। একজন অভিভাবক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন,আমার মেয়ে অসুস্থ তার পায়ে ঘাঁ হয়েছে। তাকে শাস্তি দিলে সে আয়ার মোবাইলফোন দিয়ে বাড়িতে ফোন দেয়। স্কুলে গিয়ে ওই অভিভাবককে প্রথমে গেট পেরোতেই দেয়া হয়নি। একপর্যায়ে গেট পেরিয়ে শাস্তি মওকুফের আবেদন জানানো হলেও তাতে কর্ণপাত করেননি বদমেজাজি জিনিয়া ম্যাডাম। কয়েকজন কোমলমতি ছাত্রী বলে,রোদে দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট দেখে আমাদের দারোয়ান দাদু কয়েকজনকে বেরোনোর সুযোগ দিয়েছিলো এ অবস্থা দেখে ফেলে জিনিয়া ম্যাডাম দারোয়ান দাদুকেও বকতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদে ছুটি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সকলকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
এ ব্যাপরে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে চলতি দায়িত্ব পালনকারী) মাহফুজুল হোসেন উজ্জ্বলের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসারের চলতি দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার ৪-৫টি বিদ্যালয়ের পরিদর্শন কাজ সেরে আমি গতকাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়েই ঢুকতে পারেনি। ছাত্রীদের শাস্তি ও রোদে দাঁড় করানোর ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।
সচেতনমহলের দাবি যেখানে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ছড়ি-লাঠি বাদে শিক্ষকরা ক্লাসে ঢুকবেন। সেখানে বোশেখের প্রখর রোদে খোলা আকাশের নিচে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখা ছড়ি-লাঠির চেয়েও ভয়ঙ্কর। এ ব্যাপারে অভিভাবক ও সচেতনমহল বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসককে বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।