মেহেরপুরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনাসভায় শিল্পমন্ত্রী

 

যারা জাতীয় পতাকা অবমাননা করে তারা এদেশকে অস্বীকার করে

মাজেদুল হক মানিক/শফি উদ্দীন: শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এদেশ স্বাধীন হতো না। যুদ্ধের সময় তিনি যাই নির্দেশ দিতেন এদেশের মুক্তিকামী মানুষ তাই পালন করতেন। আজকে যখন জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত সরাবিশ্বে সমাদৃত সেই মুর্হূতে তারা তা মনে না। তার মানে তারা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে অস্বীকার করে। বঙ্গবন্ধকে অস্বীকার করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে আঘাত করার উদ্দেশ্য ছিলো উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনাকে কিংবা আওয়ামী লীগকে আঘাত করার উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করা। আজকের এ দিবসের মধ্যদিয়ে যুদ্ধপরাধীমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। আন্দোলনের মাধ্যমে যারা ঘুমন্ত মানুষকে হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে তোলার নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুর মুজিবনগর আম্রকাননে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথাগুলো বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে বিএপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। আন্দোলন কতো প্রকার কী কী আওয়ামী লীগ ছাড়া কি কেউ জানে? আন্দোলনে যারা চ্যাম্পিয়ন তারা এ মঞ্চে বসে আসে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার  মারা গেছে। ও-আর কবর থেকে কোনোদিন উঠে আসবে না। শেখ হাসিনার অধীনে আগামী ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি’র রোড টু ডেমেক্রেসীর বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ডাকে সেদিন আপনার কাজের বুয়া ছাড়া কেউ ছিলো না। কেউ ছিলো না। আন্দোলনের কথা যারা বলবে তাদের পেদানি দিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর সহোচর একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ তার বক্তৃতায় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের স্মৃতি চারণ করেন।  তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু রাস্ট্রপতি হিসেবেই দেশে ফিরে আসেন। পরদিন তাজ উদ্দীন আহম্মেদও বাড়িতে বসে সংসদীয় গণতন্ত্রের সরকার ব্যবস্থায় তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ইতিহাসের কোনো বিষয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে তাহলে জিয়াউর রহমান কীভাবে মেজর জেনারেল হলেন। পাকিস্তান এখনো পর্যন্ত একটি অকার্যকর রাষ্ট্র রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানের মদদেই উল্টাপাল্টা কথা বলে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিএনপি নেতারা।

নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, খুন ধর্ষণ যদি পাপ হয় তাহলে একাত্তরের যারা পাপ করেছে তাদের বিচার করে এদেশ পাপমুক্ত করা হবে। সরকারের চলতি মেয়াদের মধ্যেই মুজিবনগর ও দৌলতপুরে স্থলবন্দর স্থাপন করা হবে। মেহেরপুর জেলাবাসীর প্রাণের দাবি স্থলবন্দর স্থাপনে প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মুর্খ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিলিন করতেই পাকিস্তানের মদদে বিএনপির নেতারা ইতিহাসের মিথ্যাচার করছে।

সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অপর্ণ করেন মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর আনছার সদস্যরা মন্ত্রীদের গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে শেখ হাসিনা মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় জেলা প্রশাসন আয়োজিত জনসভা শুরু হয়। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেলের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, মেহেরপুরের তৎকালীন এসডিও প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী, মুজিবনগর সরকারের গার্ড অব অনার প্রদানের নেতৃত্বদানকারী মাহবুব উদ্দীন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, জাতীয় সংসরে হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহম্মেদ পলক, রাজশাহী  সিটি সাবেক মেয়র খাইরুজ্জামান লিটন, সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ান, মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. মিয়াজান আলী, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়া উদ্দীন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মোল্লা।

সূর্যদয়ের সাথে সাথে স্মৃতিসৌধে পতাকা উত্তোলন করেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন ও মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাজনীন সুলতানা।

এদিকে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকাল থেকেই আম্রকানন মানুষে কানাই কানাই ভরে যায়। মেহেরপুর জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলার নানা শ্রেণিপেশার মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা সমবেত হন।

অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সমুন্নত রাখা এবং একাত্তরের মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকারের মধ্যদিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। দেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠের ৪৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঐতিহাসিক এ দিনটি স্মরণে রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি স্মৃতিবিজড়িত মেহেরপুরের মুজিবনগরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননেও জাতীয়ভাবে পালিত হয় নানা কর্মসূচি। দিবসটি পালনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের জনতার ঢল নামে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে দলীয় প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, সাহারা খাতুন, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জিয়াউর রহমান কীভাবে প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়? বিএনপি তো তখন সৃষ্টিই হয়নি। জিয়াউর রহমান এই সরকারকে (মুজিবনগর সরকার) গার্ড অব অনার করেছেন। তিনি বলেন, তারা (বিএনপির বর্তমান নেতারা) ইতিহাস বিকৃতি করেছে। সঠিক ইতিহাস সমুন্নত রাখার পাশাপাশি বিকৃত ইতিহাস প্রত্যাখ্যান করতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মল্লিক সাঈদ মাহবুবের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ হামিম হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (সার্বিক) আনজুমান আরা ও অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী, সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, সাংবাদিক শাহ আলম সনি ও ব্র্যাকের জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন আবু নওশের। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এনডিসি মো. মোখলেছুর রহমান।

বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে চুয়াডাঙ্গাকে প্রথম রাজধানী ঘোষণা করা  ও ১০ এপ্রিল অস্থায়ী সরকারের শপথের দিন ধার্য করা হয়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায়  পাকবাহিনী উপর্যুপরি হামলা চালায়। যার প্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল পার্শ্ববর্তী মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় অস্থায়ী সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হয়। যা পরবর্তীতে মুজিবনগর সরকার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বক্তারা অবিলম্বে চুয়াডাঙ্গাকে অস্থায়ী রাজধানীর স্বীকৃতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ক্ষয়ক্ষতি পূরণেরও দাবি করেন। আলোচনা শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় দিবসটি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে উপজেলা কৃষি অফিসারের সভাপতিত্বে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এএইচএম শামিমুজ্জামান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজ কুমার পাল, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সাহা, উপজেলা প. প. কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক শরীফুল আলম মিল্টন, মৎস্য কর্মকর্তা আইয়ুব আলী, উপসহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান প্রমুখ। আলোচনা শেষে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষক আক্কাচ আলী, আসমত আলী বিশ্বাসের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সূচিসহ শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নাজির হামিদুল ইসলাম।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে উপজেলা হলরুমে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন। মুজিবনগর দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, উপজেলা হিসাবরক্ষন অফিসার আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা সমবায় অফিসার আবুল কালাম আজাদ, ইউআরসি সহকারী ইন্সট্রাক্টর আনারুল ইসলাম প্রমুখ।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, নানা আয়োজনে বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এদিনে তদানীন্তন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথ তলায় আম্রকাননে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আলোচনাসভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সভায় জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাসরিন জাহান, প্রাক্তন উপসচিব আবু বক্কর, জেলা তথ্য কর্মকর্তা এএসএম কবীর, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আয়ুব হোসেন, সাবেক পৌর মেয়র আনিছুর রহমান খোকা, ঝিনাইদহ মহিলা পরিষদের সভাপতি মনোয়ার খাতুন, সাধারণ সম্পাদক মিনা সেলিম বক্তব্য রাখেন।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ দিবসটি উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবপ্রসাদ পাল। দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুবকর সিদ্দীক, উপজেলা প্রকৌশলী খায়রুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান ও থানার দারোগা মিজান। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মিতালী সংঘের শিল্পীবৃন্দ।

আলমডাঙ্গা ব্যরো জানিয়েছে, মজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের হলরুমে দিবসের পটভূমি ও তাৎপর্যের ওপর আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। মেহেরপুর মুজিবনগরের বৈদ্যনাথতলায় আম্রকাননে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের গঠন ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ৪২তম ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ডা. সাহাবদ্দিন আহমেদ সাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান (বীর প্রতীক), মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মজিবার রহমান, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুলতান জোয়ার্দ্দার, মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন কমান্ডার, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম। প্রেসক্লাব সভাপতি হামিদুল ইসলাম আজমের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মো. জহরুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিল্লুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মিজানুর রহমান, মহিলা বিষয়ক অফিসার মাখছুরা জান্নাত, সমাজসেবা অফিসার আবু তালেব, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দল্লা আল মামুন, বিআরডিবির প্রকল্প কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন, যুব উন্নয়ন অফিসার জাকির হোসেন, হাসানুজ্জামান চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী, মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক প্রমুখ।