কুষ্টিয়ায় জাসদ নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন : আওয়ামী লীগ নেতা আহত

স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ার মিরপুরে পুলিশ ক্যাম্পের অদূরে দুর্বৃত্তদের প্রকাশ্যে গুলিতে জাসদ নেতা ইসমাইল হোসেন পাঞ্জের (৫৬) নিহত হয়েছেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে শফিকুল ইসলাম (৫০) নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা আহত হন। গতকাল সোমবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের আহমেদপুর পুলিশ ক্যাম্পের অদূরে একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পাঞ্জের মিরপুর উপজেলা জাসদের সাবেক সহসভাপতি। আর গুলিবিদ্ধ আহত শফিকুল পোড়াদহ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শফিকুলকে সোমবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

নিহত পাঞ্জেরের ছেলে মিটুল জানান, ফজরের নামাজের পর প্রতিদিনের মতো সোমবার তার পিতা হাঁটতে বের হন। এক সময় স্থানীয় আহমেদপুর বাজারের আবদুর রশিদের চায়ের দোকানে বসে তার পিতা ও আত্মীয়-শফিকুল চা খাচ্ছিলেন। এ সময় একটি  মোটরসাইকেলযোগে তিন দুর্বৃত্ত এসে তাদের ওপর গুলি চালিয়ে দ্রুত চলে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে পাঞ্জেরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আহত শফিকুল ইসলাম আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন মিটুল বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেছেন। স্থানীয়রা হত্যাকাণ্ডের স্থল থেকে আহমেদপুর পুলিশ ক্যাম্পের দূরত্ব তিন মিনিটের হাঁটাপথ বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে আহমেদপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বদিউর রহমান সোয়া কিলোমিটার বলে দাবি করেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত পাঞ্জেরের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি একাধিকবার অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন। গত মার্চের ২০ তারিখে একটি হত্যা মামলায় জামিন নিয়ে পাঞ্জের জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এদিকে গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপির উপস্থিতিতে কুষ্টিয়ার মিরপুরের আহমদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জাসদ নেতা ইসমাইল হোসেন পাঞ্জেরের জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্তানে তার লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, নিহত পাঞ্জের আলী কুষ্টিয়া অঞ্চলের বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। তিনি চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠ। তার প্রতিবাদের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো সেই সন্ত্রাসীর পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তার মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সে যে বক্তব্য দিয়ে গেছে সেই বক্তব্য ধরে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ নেবে। প্রশাসন প্রকৃত খুনিদের বিচারের মাধ্যমে জনগণের নিরাপত্তা বিধান করবে।

জানাজায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম স্বপনসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী-সর্মথক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রেজা জানিয়েছেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় প্রতিপক্ষ দুলালের সাথে পাঞ্জেরের বিরোধ চলে আসছিলো। সূত্র জানায়, সন্দেহভাজন দুলাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক শীর্ষ নেতার মামা। তার সাথে রয়েছে আওয়ামী লীগের এক নেতা। ওই নেতা কুষ্টিয়ার সকল টেন্ডার বাণিজ্য ও চরমপন্থি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।