জুয়াড়ি পিতাকে ফেরানোর জন্য !

ভ্রাম্যমাণ/কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি: বদ অভ্যাস থেকে পিতাকে ফেরানোর বহু চেষ্টা করেছিলো ছেলে রাজু আহাম্মেদ। কিন্ত না, পিতা রবিউল ইসলামের জুয়া খেলার নেশা কোনো ভাবেই পিছু ছাড়ছিলো না। আর তাইতো জুয়ার আসরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পিতাকে রক্তাক্ত জখম করেছে সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে  চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ালগাছি বাজারে। রবিউল ইসলামকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর ছেলে রাজুর স্থান হয়েছে দামুড়হুদা থানা হাজতে।

এলাকাবাসী এবং পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ালগাছি গ্রামের রবিউল ইসলাম (৫০) দীর্ঘদিন ধরে জুয়ায় আসক্ত। বেকার পিতার সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছেলে রাজু আহাম্মেদ (২১)। দু বোন আর মাকে নিয়ে বহু কষ্টে দিন চলে রাজুর। রোজগার করা টাকার কিছু অংশ প্রতিদিনই মায়ের হাতে তুলে দিতো ছেলে। ওই টাকা বিভিন্ন অজুহাতে হাতিয়ে নিয়ে পিতা রবিউল বসে যেতেন কুড়ুলগাছি বাজারের জুয়ার আসরে। এরই মধ্যে বিক্রি করেছেন দুটি গরুসহ ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র। বার বার নিষেধ করা সত্বেও ছেলের কথা কানে তোলেননি উড়ণচণ্ডি পিতা। আর তাইতো ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে আইন নিজের হাতে তুলে নেয় রাজু আহম্মেদের। গতকাল সোমবার সকালে ছেলের কাছে খবর আসে ওই জুয়ার আসরে আজ আবারও বসেছেন রবিউল। বাড়ী থেকে ধারলো দা নিয়ে সে পৌঁছে যায় কুড়ালগাছি বাজারে। সবার সামনে নিজ হাতে পিতাকে হত্যার উদ্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাজু, চালায় এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্রের আঘাত। বুকের পাঁজড়, হাত সব মিলিয়ে খানচারেক কোপ। উপস্থিত গ্রামবাসী এগিয়ে এসে রাজুকে নিরস্ত্র করে আটকে পুলিশে খবর দেয়। গুরুতর আহত রবিউলকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে রাজু আহম্মেদকে আটক করে দামুড়হুদা থানায় নিয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ সউদ কবীর জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রবিউল ইসলামের অবস্থা এখনও স্থিতিশীল বলা যাচ্ছে না। আর দামুড়হুদা থানার ওসি আহসান হাবীব জানিয়েছেন, পিতার ওপর হামলার বিষয়ে রাজুর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনার তদন্তে কাজ করছে পুলিশ।