নারায়ণগঞ্জে জোড়া খুন

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি মোকাম নারায়ণগঞ্জ নগরীর নিতাইগঞ্জ এলাকায় একটি আটার মিলের এক শ্রমিক ও এক নৈশপ্রহরী খুন হয়েছেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে তাদের হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সকালে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশের ধারণা মিলেরই এক শ্রমিক এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এলাকার অন্য নৈশপ্রহরীরা পুলিশকে জানায়, নিতাইগঞ্জের নায়না ফ্লাওয়ার মিল ২-এর গেটের ভেতরে একটি রক্তাক্ত লাশ দেখা যাচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেখতে পায় যে ফ্লাওয়ার মিলের একতলায় নৈশপ্রহরী আবদুল আজিজের লাশ পড়ে আছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন। লাশের পাশে রক্তাক্ত পায়ের ছাপ অনুসরণ করে তেতলায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে মিলের শ্রমিক হোসেন মিয়ার লাশ পড়ে আছে। তার ঘাড়ে, হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ও গলায় কাটার চিহ্ন। মঞ্জুর কাদের জানান, পায়ের ছাপ ও অন্যান্য চিহ্ন দেখে মনে হয়েছে যে প্রথমে তেতলায় ময়দার মিলের সামনে মিলের শ্রমিক হোসেন মিয়াকে খুন করা হয়। এরপর খুনি পালিয়ে যাওয়ার সময় নৈশপ্রহরী বাধা দিলে তাকেও খুন করে সে। এরপর  পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে মিলের শ্রমিক তাহেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে তাহেরই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সকাল নয়টায় লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নায়না ফ্লাওয়ার মিলের মালিক নাহিদ হাসান সুজন জানান, নিহত শ্রমিক হোসেন মিয়ার (৩৫) বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার নয়ানি লক্ষ্মীপুর গ্রামে। নারায়ণগঞ্জে সে গোপচরের সুকুমপট্টি এলাকায় এক বাড়িতে ভাড়া থাকতো। অন্যদিকে নৈশপ্রহরী আবদুল আজিজর (৫৫) বাড়ি নারায়ণগঞ্জ নগরীর পাইকপাড়া এলাকায়। ঘটনার সময় মিলে দশ-বারোজন শ্রমিক কর্মরত ছিলো।  নিহত শ্রমিক হোসেন মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম জানান, তাহের মিয়া বা কারও সঙ্গে হোসেনের কোন বিরোধের কথা তার জানা নেই। হোসেন মিয়া ৬০০০ টাকা বেতনে মিলে চাকরি করতো। শনিবার রাত ৮টায় সে কাজে যায়। সকাল ৯টায় তার ডিউটি শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তার মোস্তাকিম নামের আড়াই বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, মিলে এসময় দশ-বারোজন শ্রমিক কর্মরত থাকলে ও মিল চললে এক হাত দূরেও কথা শোনা খুব কঠিন। এসময় মিলের বেশির ভাগ শ্রমিক ঘুমিয়েছিল। তাই অন্য শ্রমিকদের ঘটনা জানার সম্ভাবনা কম।

Leave a comment