জোড়া খুন মামলার আসামি চরমপন্থি কুফান গ্রেফতার

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানা পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার বোয়ালমারি কানাইবাবুর আমবাগানে জোড়া খুন মামলার আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী চিহ্নিত অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ চারুলিয়ার কুফানকে (২৬) দামুড়হুদা থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল রোববার বিকেল ৪টার দিকে দামুড়হুদা থানা পুলিশ গোপন সংবাদ পেয়ে তাকে চারুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। আটক কুফান উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের মৃত তেঁতুল খাঁর ছেলে ও নিহত সন্ত্রাসী সাথীর ছোট ভাই। তাকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আজ সোমবার বিজ্ঞ আদালতে সোপার্দ করা হতে পারে।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, আটক কুফান বোয়ালমারি কানাইবাবুর আমবাগানে জোড়া খুন মামলার একজন আসামি। সে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা এবং এলাকার চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ। তার বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদ পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম, এএসআই নেওয়াজ মোর্শেদ, এএসআই শামসুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতকাল বিকেল ৪টার দিকে চারুলিয়া এলাকা থেকে আটক করে। তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রোববার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার বোয়ালমারী কানাইবাবুর আমবাগানে চরমপন্থি দলের দু সদস্য-মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের মৃত তামির শেখের ছেলে শাহাবুর ওরফে সাগর (৩০) ও একই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে সেলিম শেখকে (৩৬) জবাই করে হত্যা করে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা। সোমবার সকালে পথচারীরা গলাকাটা দুটি ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে নিহত দুজনের নাম পরিচয় শনাক্ত করেন এবং লাশ দুটি উদ্ধার করে থানায় নেন। বেলা ১১টার দিকে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠায়। বিকেলে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ নিহতদের পরিবারের লোকজনের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। গতকাল বিকেলেই নিহত শাহাবুরের বড় ভাই তাহাজুদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনের নামে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিজ গ্রামের কবরস্থানে নিহতদের লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

পরে নিহত সেলিমের চাচাতো ভাই আজিজুর রহমান জানান, নিহতরা মহাজনপুরের কাজল মিয়ার স্টার ইটভাটায় নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতো। সন্ত্রাসীরা তাদেরকে ভাটা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে।

স্থানীয় অপর একটি সূত্র জানায়, নিহত দুজনই স্থানীয় চরমপন্থি দলের (বারী হক-কাশেম গ্রুপ) সক্রিয় সদস্য। এলাকায় আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে খুন হতে হলো তাদেরকে।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবিব জানান, নিহত দুজনই দামুড়হুদা ও মুজিননগর থানার তালিকাভুক্ত (৪ ও ৫ নং) সন্ত্রাসী। তাদের নামে মুজিবনগর থানায় চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া প্রায় বছরখানেক আগে ফেনসিডিল পাচারের অপরাধে ওই দুজনকে দামুড়হুদা থানা পুলিশ দুবার আটক করেছিলো। মাত্র দেড় মাস আগে তারা জামিনে হাজতমুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরে।

Leave a comment