রাত পোহালেই ভারতে সংসদ নির্বাচন

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাত পোহালে ভোট। কাল সোমবার প্রথম দফার এ ভোট হচ্ছে বাংলাদেশলাগোয়া ত্রিপুরা এবং আসামের একাংশে। এটি ভারতের ১৬তম জাতীয় নির্বাচন। আসামে ৫টি এবং ত্রিপুরার ২টি আসনে ভোট হবে এদিন। আসামের ছয় কোটি এবং ত্রিপুরায় এক কোটি ভোটার সাড়ে চারশ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হুমকি উপেক্ষা করে প্রথম দফায় উত্তর-পূর্ব ভারতের এ ভোট শুধু কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি বা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছেই নয় বরং ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছেও অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কেননা এবার অন্য যে কোনো লোকসভা ভোটের চেয়ে রাজনৈতিক চমক অনেক বেশি।

দেশজুড়ে মোদি ফ্যাক্টরের স্পষ্ট ইঙ্গিত এরই মধ্যে ভোট নিয়ে করা বিভিন্ন জরিপে প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস দেশজুড়ে তৃতীয় শক্তি হিসেবে ওঠে আসছে। ত্রিপুরায় মোদি ফ্যাক্টর তেমন কাজ করবে না বলেই মনে করছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। ত্রিপুরা এমনিতেই বামপন্থীদের শক্ত ঘাঁটি। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা যেখানে বামরা প্রায় মুছে যেতে বসেছেন সেখানে কমরেড মানিক সরকার বামপন্থীদের পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তবে ত্রিপুরায় সম্প্রতি বেড়েছে তৃণমূলের প্রভাব। সেখানে প্রার্থী হয়েছেন রতন চক্রবর্তী নামের সাবেক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ফলে এখানে মোদি ফ্যাক্টর কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে, সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১৬ মে পর্যন্ত।

আসামের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ কংগ্রেসের প্রভাবে টিকে রয়েছেন। এবার তার ছেলে গৌরভ গগৈ প্রার্থী হয়েছেন। ছেলের বিদেশি বউ এরই মধ্যে স্বামী তথা কংগ্রেসের প্রার্থীর প্রচার করতে গিয়ে অসমিয়া ভাষায় বক্তব্য দিয়ে মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় তুলেছেন। ফলে প্রচারের ক্ষেত্রে ব্যাপক মাইলেজ পেয়েছেন তরুণপুত্র। কংগ্রেসের ভিত এই রাজ্যে বরাবরই শক্ত।

যদিও প্রচার-প্রচারণায় উত্তর-পূর্ব ভারতের এ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য দুটিতে মোদি ঘুরে বেড়িয়েছেন। নিজেদের শক্ত অবস্থান থাকলেও কংগ্রেসের যুবরাজ রাহুল গান্ধী, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রচার সভাগুলোতে ভিড় ছিল যথেষ্টই চোখে পড়ার মতো। আর এই দুটি রাজ্যে নতুন করে প্রভাব বিস্তার করতে মরিয়া তৃণমূলও প্রচার-প্রচারণায় বিজেপি-কংগ্রেসের তুলনায় পিছিয়ে ছিল না। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জিও একাধিক নির্বাচনী সভা করেছেন।
ত্রিপুরা আসামের প্রথম দফার নির্বাচনে দেড় ডজনের বেশি হেভিওয়েট প্রার্থীর ভাগ্য পরীক্ষা হচ্ছে। ভারতের দুইবারের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এই আসাম রাজ্য থেকেই তিন দফায় রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফলে আসামে ভোটের ফলাফলের ব্যত্যয় হলে কংগ্রেসের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎও অন্ধকারাচ্ছন্ন হতে পারে।

যদিও লোকসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচন হয় না। এটি বিধানসভার সদস্যরা নির্বাচন করেন। কিন্তু সার্বিকভাবে লোকসভা অ-কংগ্রেসিরাও ভালো ফল করলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে। সে ক্ষেত্রে এমন আশংকা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে কংগ্রেস নেতারাও।

নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং রক্তপাতহীন করতে ভারতের নির্বাচন কমিশন ৯ দফার ভোট পর্বের মধ্য দিয়ে বৃহত্তম এই গণতান্ত্রিক উৎসবকে সফল করতে চাইছে। ১৬ মে ভোটের ফল জানা যাবে।

Leave a comment