ভারত-শ্রীলঙ্কা ফাইনাল

স্টাফ রিপোর্টার: নিরাপত্তা শঙ্কা, ভেন্যু অনিশ্চয়তা, জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্স; অনেক নেতিবাচক ব্যাপার-স্যাপার মাথায় নিয়ে আজ থেকে ঠিক ২১ দিন আগে বাংলাদেশে শুরু হয়েছিলো স্মরণকালের বৃহত্তম ক্রীড়া আয়োজন। এক এক করে প্রায় সব নেতিবাচক ব্যাপারকেই মাটি চাপা দিয়ে একটু একটু করে সেই বৃহত্তম আয়োজন অবশেষে শেষের দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা হয়তো দর্শককে তৃপ্ত করতে পারেননি; কিন্তু মাঠে ও মাঠের বাইরে শেষ পর্যন্ত অসামান্য সব পারফরম্যান্স দিয়েই আজ শেষের দিকে পৌঁছেছে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি ২০১৪।

আজ ভারত ও শ্রীলঙ্কার ফাইনালের ভেতর দিয়ে অবশেষে পর্দা নামবে প্রায় মাসব্যাপি এ মহাযজ্ঞের। সন্ধ্যা সাতটা থেকে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে পঞ্চম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফির জন্য মুখোমুখি হবে এশিয়ার এ দু পরাশক্তি। তার আগে একই ভেন্যুতে দুপুর আড়াইটা থেকে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে দু চেনা প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। দুটি ম্যাচেই ঝড়-বৃষ্টি বাগড়া দেয়ার আশঙ্কা আছে। তেমনটা হলে খেলা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। অর্থাত্ ঝড়-বৃষ্টি চাইলে আরো একদিন প্রলম্বিত করতে পারে এই মহোত্সব।

আজ মাঠে নামার আগে কাগজ-কলমের হিসেবে ভারতকেই ফেবারিট বলে মানতে হচ্ছে। গ্রুপপর্বে প্রতিটা ম্যাচ দাপটের সাথে খেলার পাশাপাশি সেমিফাইনালে চলতি টুর্নামেন্টে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করা; ব্যাটিং বোলিং দু বিভাগেই খুব ভালো অবস্থায় আছে মহেন্দ সিং ধোনির দল। প্রথম দিকে মূলত তিন স্পিনার অশ্বিন, মিশ্র ও জাদেজার ওপর ভর করে এগোচ্ছিল তারা। সেমিফাইনাল ও গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে তাদের ব্যাটিংটাও দারুণ ঝলসে উঠেছে। স্পিনারদের পাশাপাশি টপ অর্ডার ব্যাটিং, বিশেষ করে বিরাট কোহলি দলটির প্রধান ভরসা।

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা গ্রুপপর্বে একটা ম্যাচ হেরে কাগজে-কলমে হয়তো একটু পেছানো দল। কিন্তু তাদের বোলাররাও আছেন দারুণ ফর্মে। স্পিনাররা প্রতিপক্ষকে চেপে রাখার কাজটা অসাধারণভাবে করতে পারছেন। মাহেলা জয়াবর্ধনে খুব ধারাবাহিক না হলেও ভালো ফর্মে আছেন, ফর্মে আছেন ওয়ানডে অধিনায়ক অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুসও। শ্রীলঙ্কার সমস্যা অবশ্য তাদের অধিনায়কের ফর্মহীনতায় একাদশেই জায়গা না পাওয়া। দু কিংবদন্তীতুল্য অধিনায়ক জয়াবর্ধনে, সাঙ্গাকারা ছাড়াও দলে আছেন দিলশান ও ম্যাথুসের মতো অভিজ্ঞ অধিনায়ক। কিন্তু ভবিষ্যত মাথায় রেখে তারা এই ফরম্যাটে দায়িত্ব দিয়েছিলো দিনেশ চান্দিমালের ওপর। চান্দিমাল ব্যক্তিগতভাবে ব্যর্থ হওয়ায় তার বদলে এখন দল সামলাচ্ছেন লাসিথ মালিঙ্গা।

গতকালও সংবাদিক সম্মেলনে এলেন মালিঙ্গা। এই পেস বোলার বলে গেলেন, তারা অন্তত দু গ্রেট সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনের টি-টোয়েন্টি বিদায় উপলক্ষে হলেও এই ট্রফিটা জিততে চান। সেই সাথে মালিঙ্গা বারবার বললেন, যারা ফাইনালের চাপ নিয়ে ভালো খেলবে তারাই জিতবে।

ঠিক একই সরল সিদ্ধান্ত দিয়ে গেলেন মহেন্দ সিং ধোনিও। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় দিয়ে শুরু করেছিলেন ধোনি। এরপর ওয়ানডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছেন, টেস্টে দলকে দু দফায় এক নম্বরে নিয়ে গেছেন। এখন প্রথম অধিনায়ক হিসেবে টানা তিনটি আইসিসি ট্রফি জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ধোনি অবশ্য এসব পুরোনো সাফল্য নিয়ে ভাবছেন না।