দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার রঘুনাথপুরে গাঁজা বিক্রির প্রতিবাদকারী প্রতিবাদী যুবক শাহিনের ঘাতক চাচা আলম হুজুরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জাহের ভুঁইয়া তাকে আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক ঘাতক আলম হুজুরকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, অপর দু আসামি আটক আলম হুজুরের ছেলে ডালিম ও বাস্তপুরের আনোয়ারের ছেলে আরিফ পালাতক। তাদেরকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে গাঁজা বিক্রির প্রতিবাদ করায় দামুড়হুদার রঘুনাথপুর ঘাটপাড়াস্থ নিজেদের বাড়ির সামনে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে চাচা আলম হুজুর ও চাচাতো ভাই ডালিমের হাতে থাকা ভোজালি দিয়ে একের পর এক উপর্যুপরি আঘাত করা হয় শাহিনকে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে শাহিন। বুকের বাম পাজরের ভোজালির আঘাতটি হৃৎপিণ্ডে লাগে। ঘাড়সহ পেটেও কয়েকটি ভোজালির আঘাত করা হয়। শাহিনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার সময় মারা যায় শাহীন।
নিহত শাহিনের লাশ দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আবু জাহের ভুঁইয়া সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হেফাজতে নেন এবং ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠান। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে বাদ মাগরিব গ্রামের ঈদগা ময়দানে নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। এ সময় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, রঘুনাথপুর গ্রামটি বর্তমান সংসদ সদস্যের গ্রাম। এ গ্রামে বহু গণ্যমান্য মানুষ বাস করেন। গুটি কয়েক মাদকবিক্রেতার জন্য গ্রামটি কলুষিত হচ্ছে। একজনকে খুন হতে হলো। এখন থেকে আমরা গ্রামের সাধারণ মানুষ সম্মিলিতভাবে গ্রাম থেকে মাদক উচ্ছেদের করেই ছাড়বো। এ আহ্বানে নামাজে জানাজায় শরিক মুসল্লিরা সম্মত হন। নামাজে জানাজা শেষে গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার পর ঘাতক আলম হুজুরের দোকান গুঁড়িয়ে দেয় অপরপক্ষের উত্তেজিত লোকজন। তুমুল সংঘর্ষে আহত হয় উভয় পরিবারের নারীসহ আরও ৭ জন। ঘটনার আড়াই ঘণ্টার মাথায় দেড়টার দিকে দামুড়হুদার চিৎলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে চাচা আলম হুজুরকে স্থানীয় জনগণ ধরে পুলিশে দেয়। শাহিনের লাশ দাফনের পর গতরাতেই তার পিতা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামির তালিকায় রয়েছে আলম হুজুর, তার ছেলে ডালিম ও তাদের পার্শ্ববর্তী দোকানি বাস্তপুরের আনোয়ারের ছেলে আরিফ। ডালিম ও প্রতিবেশী দোকানি আত্মগাপনে রয়েছে।