বৈঠক থেকে বাবলু গ্রেফতার : লাঞ্ছনাকারীকে সমর্থন করায় বকুলকে তিরষ্কার

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীর দর্শনার্থীর হাতে সিনিয়র স্টাফ নার্স লাঞ্ছিত মামলা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্সকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা মামলার আসামি বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠক থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অপর একজনকে বৈঠকে ডেকে তিরস্কার করে সতর্ক করে দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে চুয়াডাঙ্গা মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেছেন, হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার পরিবেশ গড়তে হবে। কেউ কোনো প্রকারের অপ্রীতিকর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটালে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য সেবাদানের কাজে যারা নিয়োজিত তাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ফলে এখন থেকে আমি নিজেই মাঝে মাঝে হাসপাতাল পরিদর্শনসহ স্বাস্থ্য সেবাদানের কাজে নিয়োজিতদের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরদারি করবো।

‌জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আলমডাঙ্গা ফরিদপুরের সাহেরা খাতুন নামের এক বৃদ্ধা কয়েক দিন ধরে চিকিৎসাধীন। তাকে দেখতে আসা খাসকররা তিওরবিলা গ্রামের বাবুল সেবিকার বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ উত্থাপন করে। অপর এক সেবিকা পাশের ওয়ার্ড থেকে ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে সহকর্মীর পাশে দাঁড়ান। তার সাথে বাবলুর শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। বাবলু অভিযোগ তুলে বলে, তাকে আগে সেবিকা থাপ্পড় মেরেছে। সেবিকাদের অভিযোগ, কিছু না বুঝেই অন্যায়ভাবে সিনিয়র স্টাফ নার্স অশ্রজাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে। ঘটনার পর হাসপাতালের নার্স ও ব্রাদাররা নিরাপত্তা চেয়ে সিভিল সার্জনের নিকট আবেদন জানান। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতাররের দাবি জানান। অঘোষিত ৩ ঘণ্টার কর্মবিরতি চলতে থাকে। সন্ধ্যায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি মেলে। সেবিকারা তাদের কাজে যোগ দেন। এরই এক পর্যায়ে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সিভিল সার্জন ডা. খন্দকার মিজানুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মাসুদ রানাসহ অনেকেই উপস্থিত হন। বৈঠকে অভিযুক্ত তিওরবিলার রবিউল ইসলাম রবির ছেলে বাবলুকেও হাজির করা হয়। সেখান থেকেই তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

অপরদিকে বৈঠক চলাকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২ মাসের বৈশাখীর পিতা বকুল হোসেন সেবিকাদের মেরেছে ঠিকই করেছে বলে মন্তব্য করলে তাকেও বৈঠকে হাজির করা হয়। তাকে তিরষ্কার করে সতর্ক করে দেন মেয়র। বৈঠক স্থল থেকে বের হয়ে বকুল হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে যান শিশুওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন তার মেয়ের শয্যাপাশে। কয়েক দিন ধরে চিকিৎসাধীন। হাতে ক্যানোলা দেয়ার কারণে ফুলে ফুঁসকুঁড়ি পড়ে ইনফেকশন হয়ে গেছে। সেবিকরা যদি ভালোভাবে ক্যানোলা দিতেন তাহলে অতোটুকু বয়সের বৈশাখীর হাতে কি ইনফেকশন হতো? এটা কেউ দেখলেন না। শুধু কি বলেছি আর তার জন্য ডেকে নিয়ে থাপ্পড় মরা হলো আমাকে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবাদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন তাদেরকেও যেমন কতর্ব্যের প্রতি আন্তরিক হতে হবে, তেমনই রোগী ও রোগী লোকজনকেও সেবাদানকারীদের প্রতি যত্নবান হতে হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে সমস্যা থাকবে না।