ফর্মের তুঙ্গে থেকে মুখোমুখি লঙ্কা-উইন্ডিজ

স্টাফ রিপোর্টার: গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দু দল এবার মুখোমুখি হচ্ছে শেষ চারে। ফর্মের তুঙ্গে থাকা শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের লড়াইয়ে মিলছে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত। আজ বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল শুরু হবে সন্ধ্যা সাতটায়।

গ্রুপ পর্যায়ের সবগুলো ম্যাচ মিরপুরেই খেলায় বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা শিরোপাধারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে দলটি। অস্ট্রেলিয়ার সাথে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে অসাধারণ জয় দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় ড্যারেন স্যামির দলটি। স্বাগতিক বাংলাদেশকে হারানোর পর কোয়ার্টার-ফাইনালে পরিণত হওয়া শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে গুড়িয়ে দিয়েছে দলটি। বিশ্বকাপের আগে দেশের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কোনোমতে সিরিজ হার এড়ানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বপ্ন দেখছে শিরোপা ধরে রাখার। আর এতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। শুরুতে ক্রিস গেইল আর ডোয়াইন স্মিথের কাছে ভালো একটা শুরু চান স্যামি। লেন্ডল সিমন্স ও মারলন স্যামুয়েলসের ওপর থাকছে মিডল ওভার এ রানের চাকা সচল রাখার দায়িত্ব। প্রথম চার ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হলেও শেষ দিকে দ্রুত রান তুলতে ডোয়াইন ব্রাভো, স্যামি, আন্দ্রে রাসেল আর দীনেশ রামদিন তো রয়েছেনই। আইসিসি টি-টোয়েন্টি ৱ্যাঙ্কিংয়ের সেরা দু বোলার লেগস্পিনার স্যামুয়েল বদ্রি ও অফস্পিনার সুনীল নারায়ণের উপস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণ খুবই শক্তিশালী। স্পিন সহায়ক উইকেটে দুজনের বিপক্ষে পাল্টা আক্রমণে যাওয়া মোটেও সহজ নয়। ক্রিসমার সানতোকি এবং অন্য বোলাররাও প্রয়োজনের সময় যথেষ্ট সহায়তা দিচ্ছেন বদ্রি, সুনীলকে। তাই ‘প্রতিশোধ’ নিতে উদগ্রীব শ্রীলঙ্কার জন্য কাজটা সহজ হবে না। টি-টোয়েন্টিতে দু দল এর আগে পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে। প্রথম চারটিতে শ্রীলঙ্কা জিতলেও শেষটি অর্থাৎ গতবারের ফাইনালে স্বাগতিকদের হৃদয় ভেঙে জিতেছিলো ড্যারেন স্যামির ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার তার পুনরাবৃত্তি চান তিনি।

তবে পিছিয়ে নেই গতবারের রানারআপ শ্রীলঙ্কাও। নিজেদের গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে এরই মধ্যে সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে তারা। মাঝখানের এক সপ্তার বিরতি ছাড়া দু মাস ধরে বাংলাদেশেই আছে দুবারের রানারআপ দলটি। অজন্তা মেন্ডিসের বদলে দলে ফিরে মাত্র ৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। অফস্পিনার সচিত্রা সেনানায়েকেও আছেন ছন্দেই। নুয়ান কুলাসেকারা, লাসিথ মালিঙ্গার উপস্থিতিতে পেস আক্রমণও যথেষ্ট ধারালো। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, থিসারা পেরেরার মতো অলরাউন্ডারদের উপস্থিতিতে দলের ভারসাম্যও অনন্য। গত এশিয়া কাপের শিরোপা জেতার পথে পাকিস্তানকে দু বার আর ভারতকে একবার হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কন্ডিশন সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা আছে তাদের। তাই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরা নিয়ে খুব একটা দুর্ভাবনা নেই তাদের। দুই ব্যাটিং কিংবদন্তী মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার এটাই শেষ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এ ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন দু জনই। তাদের বিদায়টাকে ফাইনালের মাধ্যমেই স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে শ্রীলঙ্কা। কৌশল পেরেরা, তিলকরত্নে দিলশান ভালো একটা শুরু এনে দিতে পারলেও জয়াবর্ধনে, সাঙ্গাকারা দলকে পৌঁছে দিতে পারেন নিরাপদ অবস্থানে। দ্রুত রান তোলার জন্য ম্যাথিউস, থিসারা, কুলসেকারা, সেনানায়েকের ওপরও নির্ভর করতে পারেন দীনেশ চান্দিমাল।