চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন আজ

 

 

ভোটকেন্দ্রের সুষ্ঠ পরিবেশ নিয়ে গভীর উৎকণ্ঠা

স্টাফ রিপোর্টার: উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার সাধারণ ভোটাররা উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। ইতঃপূর্বে জীবননগর উপজেলা নির্বাচনের দগদগে ক্ষত সাধারণ ভোটারদের মন থেকে শুকোয়নি। তারপরও সরোজগঞ্জ এলাকায় সশস্ত্র মহড়া এ উৎকণ্ঠার উৎসমূল। তাছাড়া সরকারি প্রার্থীর পক্ষের সমর্থকদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, কেন্দ্রদখল ও ভোট কারচুপির আগাম ঘোষণার অভিযোগ তুলে বিএনপি সমর্থিত আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল কাউনাইন টিলুর সাংবাদিক সম্মেলন সে শঙ্কা শতগুন বাড়িয়ে তুলেছে।

গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সাথে ভোট নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেকের মন্তব্য থেকে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী উপজেলার সদ্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে মহড়া চলছে। সশস্ত্র মহড়ায় সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কিত। বিএনপির অনেক সমর্থক অভিযোগ তুলেছেন, সরকারি দলের প্রার্থীর সমর্থকরা গ্রামে গ্রামে হুমকি দিচ্ছে। তাদের প্রার্থীকে ভোট না দিলে মামলায় ঢোকানো হবে, পোলিং এজেন্ট হলে হাত-পা গুঁড়িয়ে দেবে। বিএনপিপন্থি অনেক ভোটার অভিযোগ তুলেছে- সরকারি দলের প্রার্থীর সমর্থকরা গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দিচ্ছে যে, ভোট আগের রাতেই হয়ে যাবে। ভোট শুরুর অল্প কিছু সময় বাদে শেষ হয়ে যাবে। টিলুর ভোট দিয়ে কোনো লাভ হবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নওলামারী গ্রামের এক ভোটার জানিয়েছেন, সরকারি দলের সমর্থকরা গ্রামের ভোটারদেরকে সাবধান করে দিয়ে জানিয়েছে, টিলুকে ভোট দেয়ার জন্য কেউ ভোটকেন্দ্র যাবে না। গত সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে যাননি এবারও যাবেন না। জামায়াতপন্থি সমর্থকরাও নানা অভিযোগ তুলেছে। তারা বলেছেন, বিভিন্ন গ্রামে তাদের সমর্থকদের হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। আলমডাঙ্গার পারদুর্গাপুরসহ কয়েক গ্রামে তাদের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। পদে পদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে উপজেলার পোলতাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গতরাতেই জোরপূর্বক ভোট কেটে নিতে গেলে সংবাদ পেয়ে র‌্যাব উপস্থিত হয়ে সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের বেধড়ক পিটিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে ওই ঘটনায় এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ ভোটাররা। তাদের আশঙ্কা ভোট কেন্দ্রের পরিবেশও অস্বাভাবিক থাকবে। সাধারণ ভোটারদের জন্য আতঙ্কপূর্ণ থাকবে। এছাড়া সরকারি প্রার্থীর পক্ষের সমর্থকদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপির আগাম ঘোষণার অভিযোগ তুলে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল কাউনাইন টিলুর সাংবাদিক সম্মেলন সে শঙ্কা ও আতঙ্ক শতগুন বাড়িয়ে তুলেছে।

এদিকে সরকারি দলের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলার সময় তারা এসকল আশঙ্কা ও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, ওই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ থাকবে না। তাছাড়া বিএনপির দু চেয়ারম্যান প্রার্থী। আওয়ামী লীগের একজন। এমনিতেই তারা বিজয়ী হবেন। কেন তারা অনিয়ম করতে যাবেন। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তৎপর রয়েছে। ভোটারদের শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় গতরাতেই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন কেন্দ্র দখলে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ব্যালট পেপার কাটছেন। অনেকেই এ বিষয়ে মাথাভাঙ্গায় মোবাইলফোনে জানতে চান। বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসানের সাথে এ ব্যাপারে মোবাইলফোনে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a comment