আলমডাঙ্গায় কেন্দ্র দখল ও ব্যালটবাক্স ছিনতাইয়ের আশঙ্কা :বিএনপি প্রার্থী টিলুর সাংবাদিক সম্মেলন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বিএনপি সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল কাউনাইন টিলু গতকাল শনিবার রাতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। সরকার সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীদের জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল, জালভোট প্রদান, ব্যালটবাক্স ছিনতাইসহ বিভিন্ন অনিয়মের আশঙ্কায় এ সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে শহিদুল কাউনাইন টিলু কর্তৃক পঠিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে-  নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর হতেথেকে বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত আলমডাঙ্গা উপজেলায় তার পক্ষে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের ব্যাপক উদ্দীপনা ও আগ্রহ দেখে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন বিভিন্নভাবে তার পক্ষের ভোটকর্মী ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ভোটকেন্দ্রে যেতে বারণ করছে। তার কর্মী ও ভোটারদের বিভিন্ন বাজারে, চায়ের দোকানে ও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আতঙ্ক চড়াচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে তার মার্কা সম্বলিত পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে এবং প্রচারণায় সরাসরি বাধা প্রদান করা হচ্ছে। পুলিশ বাহিনী প্রত্যেক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীর বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে এবং বিনা অভিযোগে গ্রেফতার করছে। ফলে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন। এতে তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, সরকারি দলের প্রার্থীর কর্মীরা নির্দেশ দিচ্ছে ভোটের প্রচারণা বন্ধ করে দিতে, ভোটের আগে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে, যারা এলাকায় থাকবে তাদের সকলকে পুলিশ ধরে নিয়ে কঠিন কঠিন মামলায় জেলে ঢোকাবে, যারা পোলিং এজেন্ট হবে তাদের বড় ধরনের ক্ষতি করা হবে, ভোটকেন্দ্রে গেলে হাত-পা ভেঙে ফেলা হবে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে লাশ ফেলে দেয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। তারা নিজেদের পছন্দ মতো প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দিয়েছে। এ বিষয়ে খোঁজখবর  নিয়ে জানতে পেরেছি, তারা বেশ কিছু কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার পরিবর্তন করে ১০০ ভাগ আনুগতদের দায়িত্ব দিয়েছে। ভোটের আগের রাতেই সব কাজ শেষ করবে। ভোটের দিন সকাল ১০টার মধ্যেই সব ভোট দেয়া শেষ হয়ে যাবে এবং সন্ধ্যার আগেই তারা বিজয় মিছিল করবে মর্মে বলে বেড়াচ্ছে। এর ফলে শান্তিপ্রিয় ভোটাররা চরম আতঙ্কে আছে। এ সব বিষয়ে রিটার্নিং, সহরিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার, র‌্যাবসহ প্রশাসনের সকল পর্যায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বার বার আবেদন জানিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না, তাই আজ আমি জাতির বিবেক হিসেবে আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের সকল পর্যায়ের ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং তাদের প্রতি উদাত্ত্ব আহ্বান জানাচ্ছি সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করতে। একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা উপস্থিত হয়ে যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারে তার ব্যবস্থা করবেন এটা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব বটে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, তফশিল ঘোষণার পর হতে প্রার্থী হিসেবে তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা লাভ করছি, আগামী কয়েকটি দিন ভোটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই একদিন সাংবাকিদের নজরদারী বাড়ানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি এবং আশা প্রকাশ করছি আগামী ৩১ মার্চ ২০১৪ নির্বাচনের দিন অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রসহ সকল কেন্দ্রে সকল প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া সাংবাদিক বন্ধুগণ ও ভোট পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থেকে ভোটের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবেন। তিনি ১০৩টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করেছেন।   সাংবাদিক সম্মেলনে পৌরসভাধীন ২টি কেন্দ্রসহ উপজেলার ৩০টি কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সকল কেন্দ্রসহ সকল কেন্দ্রে ভোটাররা নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে ভোটারাধিকার প্রদান করে যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে জয়ি করতে পারে, সে জন্য সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক ডাবু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারুলা খাতুন রাবেয়া, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম, ইস্রাফ হোসেন, আজিজুর রহমান পিন্টু, ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান হাসান, বোরহান উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর রহমান, অহিদুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।