ঝিনাইদহে অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহীদুল হক

অপরাধ কমিয়ে আনতে কমিউনিটি পুলিশের বিকল্প নেই

ঝিনাইদহ অফিস: পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) একেএম শহীদুল হক বলেছেন, নারী নির্যাতন, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, সামাজিক অবক্ষয়, সামাজিক অস্থিরতা, মাদক, পরিবহন সেক্টরে অপরাধ কমিয়ে আনতে হলে কমিউনিটি পুলিশের বিকল্প নেই। কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালন করতে হবে। জনগণ ও পুলিশের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি করতে হবে। প্রত্যেক পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই তা করতে চায় না। পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে পুলিশ জনতা এক সাথে সমাজের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। তিনি শুক্রবার বিকেলে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনস মাঠে জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জ’র ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান বিপিএম ও ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম। সমাবেশে একেএম শহীদুল হক আরও বলেন, পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে। জনগণের সমস্যর সমাধান করতে হলে সমস্যার কারণ চিহ্নিত করতে হবে। পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে নারী নির্যাতন, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে পুলিশকে সহায়তা করতে হবে। পুলিশের অতিরিক্ত আইজি আরো বলেন, সমাজের সর্বস্তরের ভালো মানুষ নিয়ে পুলিশিং কমিটি করতে হবে। পুলিশিং কমিটিতে যদি কোনো খারাপ লোক থাকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে এবং ভালো মানুষকে কমিটিতে আনতে হবে। কমিউনিটি পুলিশিঙের মাধ্যমে কোনো বিরোধকে বিচার করবেন না, দু পক্ষকে নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি করবেন। দু পক্ষ যদি রাজি না হয়, তা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে দেবেন। একেএম শহীদুল হক বলেন, থানায় কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি ও দালাল এক সাথে থাকতে পারে না। জনগণ ও পুলিশের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি করতে হবে। অনুষ্ঠানে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের নেতৃবৃন্দ ও উপস্থিত সুধীজনের প্রশ্নের জবাবে পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক আরো বলেন, জনগণের মধ্যে পুলিশি ভীতি কমানোর জন্য কমিউনিটি পুলিশিং। কমিউনিটি পুলিশকে যদি গতিশীল করা যায় তাহলে জনগণের ভীতি কমে আসবে। কোনো পুলিশ সদস্য যদি খারাপ কাজ করে তা হলে ওপেন হাউজ ডেতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সরাসরি জানাবেন।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাগুরার পুলিশ সুপার জিহাদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান, যুগ্মসম্পাদক তৈয়ব আলী জোয়ার্দ্দার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস, ঝিনাইদহ কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি আমির হোসেন মালিথা, মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাহমুদুল ইসলাম ফোটন, সহকারী পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী, এসআই জিয়ারুল ইসলাম, কামরুজ্জামান প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খুলনা রেঞ্জ’র ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান বিপিএম বলেন, পুলিশ সবই করতে পারবে, যদি জনগণ পুলিশের বন্ধু হয়ে কাজ করে। ঝিনাইদহে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতা আছে। এর সুফলতা আমরা সবাই ভোগ করবো। সকলে মিলে কমিউনিটি পুলিশকে মনের মধ্যে স্থায়ী রূপ দিতে পারবো। সুধী সমাবেশে ঝিনাইদহবাসীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ঝিনাইদহে নতুন করে কমিউনিটি পুলিশিঙের কমিটি করা দরকার। কমিটি আরো শক্তিশালী করতে হবে। থানার দালালদের দৌরাত্ম্যে পুলিশিং কমিটি নিষ্ক্রীয় হয়ে গেছে। যারা পুলিশকে সংবাদ দেবে, তাদের গোপনীয়তা রাখতে হবে। তাহলে সংবাদদাতারা পুলিশকে সংবাদ দেবে এবং সমাজে সন্ত্রাস নির্মূল হবে। অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাসহ কমিউনিটি পুলিশের সহস্রাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।